প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন পরিপত্র: বেতনে কর কর্তন নিশ্চিত করতে হবে

Views

আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের বেতন থেকে কর কাটার নির্দেশ

👉সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন থেকে উৎসে কর কর্তন বাধ্যতামূলক: এনবিআর ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ

সংবাদ প্রতিবেদন:

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন থেকে উৎসে আয়কর কর্তন না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সব মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিনান্স অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এনবিআরের সচিব (অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ) ও চেয়ারম্যান মোঃ আবদুর রহমান খান এফসিএমএ স্বাক্ষরিত আধা সরকারি পত্র (নং-০৮.০০.০০০০.০১১.৯৯.০০১.২৫-১৬৮, তারিখ ০৭ অক্টোবর ২০২৫)-এ জানানো হয় যে, আয়কর আইন, ২০১৩ এর ধারা ৮৬(৩) অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন থেকে উৎসে কর কর্তন করা বাধ্যতামূলক।

পত্রে উল্লেখ করা হয়, iBAS++ প্ল্যাটফর্মের তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে—অনেক সরকারি কর্মচারীর করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বেতন বিল থেকে কোন আয়কর কর্তন করা হচ্ছে না। বিশেষ করে চলতি আয়বছরে যেসব পুরুষ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাসিক মূল বেতন ২৬,৭৮৫ টাকা বা তার বেশি এবং নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাসিক মূল বেতন ৩০,৩৫৭ টাকা বা তার বেশি, তাঁদের আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করেছে। তাই তাদের বেতন হতে উৎসে কর কর্তন করা আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী বাধ্যতামূলক।

এমতাবস্থায় এনবিআর নির্দেশনা দিয়েছে যে, প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিনান্স অফিসাররা যেন করযোগ্য বেতন ও ভাতা পরিশোধের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন নিশ্চিত করেন। যদি কোনো কর্মকর্তা অন্য উৎস থেকে অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করে থাকেন, তবে তা সমন্বয়পূর্বক কর কর্তন করতে হবে।

এরই ধারাবাহিকতায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট ও অডিট শাখা থেকেও একই বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বাজেট ও অডিট) ডা. মোঃ মাহফুজুল হক স্বাক্ষরিত স্মারক (নং-৩৮.০০.০০০০.০০৬.২০.১৬০.২২.৩৬৩, তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২৫)-এ বলা হয়, এনবিআরের পত্রের আলোকে সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিনান্স অফিসারকে উৎসে আয়কর কর্তনের পরই বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

সরকার মনে করছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকারি পর্যায়ে আয়কর আদায় প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর হবে। একইসঙ্গে এটি রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

---

সংবাদ সংক্ষেপে:

1. সরকারি কর্মচারীদের বেতন থেকে উৎসে কর কর্তন বাধ্যতামূলক।

2. পুরুষ কর্মচারী: মূল বেতন ২৬,৭৮৫ টাকার বেশি হলে কর প্রযোজ্য।

3. নারী কর্মচারী: মূল বেতন ৩০,৩৫৭ টাকার বেশি হলে কর প্রযোজ্য।

4. অন্য উৎস থেকে অগ্রিম কর দেওয়া থাকলে তা সমন্বয় করা যাবে।

5. নির্দেশনা কার্যকর করতে এনবিআর ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র জারি।

 সচিব

( অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ)

ও

চেয়ারম্যান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ঢাকা

Secretary 

Internal Resources Division 

Chairman 

National Board of Revenue

আধা সরকারী পত্র নং-০৮.০০.০০০০.০১১.৯৯.০০১,২৫-১৬৮

তারিখ: ২২ আশ্বিন ১৪৩২  ০৭ অক্টোবর ২০২৫

প্রিয় মহোদয়,

আসসালামু আলাইকুম।

আপনি অবগত আছেন যে, আয়কর আইন, ২০১৩ এর ধারা ৮৬(৩) অনুযায়ী সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেতন হতে উৎসে কর কর্তনের বিধান রয়েছে, যা নিম্নরূপ

"যেইক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মকর্তা আয়নকারী ও ব্যয়নকারী কর্মকর্তা (ডিডিও) হিসাবে কার্য সম্পাদন করিয়াছেন বা সরকার বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে "চাকরি হইতে আয়" উত্তোলন করিবার জন্য নিজের বা অন্য কোনো সরকারি অধীনস্তের জন্য বিল প্রস্তুত বা স্বাক্ষর করিয়াছেন, সেইক্ষেত্রে তিনি উক্ত বিল তৈরি বা স্বাক্ষরের সময়, উক্ত আয়বর্ষের জন্য প্রদেয় বার্ষিক বেতন যদি করমুক্ত সীমা অতিক্রম করে, তাহা হইলে উক্ত আয়বর্ষের আনুমানিক মোট আয়ের জন্য প্রযোজ্য করের গড় হারে কর কর্তন করিবেন।"

০২! সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা ও আয়কর কর্তন সংক্রান্ত iBAS++ প্ল্যাটফর্মে রক্ষিত তথ্য পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, আপনার মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তরসমূহে কমরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারি তাদের মাসিক বেতন বিল হতে কোন আয়কর কর্তন করেন না। উল্লেখ্য যে, চলতি আয় বছরে যে সকল পুরুষ কর্মকর্তা-কর্মচারির মাসিক মূল বেতনের গবিমাণ ২৬,৭৮৫ টাকা এবং যে সকল নারী কর্মকর্তা-কর্মচারির মাসিক মূল বেতন ৩০,৩৫৭ টাকা বা তার অধিক তাদের আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করছে বিধায় তাঁদের বেতন হতে প্রতি মাসে উৎসে কর কর্তন করা আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী বাধ্যতামূলক।

৩৩। এমতাবস্থায়, আপনার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ অ্যাকাউন্টস এন্ড ফিনান্স অফিসারকে করযোগ্য বেতন ভাতাদি পরিশোধের ক্ষেত্রে (অন্য কোন উৎস হতে অগ্রিম আয়কর পরিশোধ হয়ে থাকলে তা সমন্বয়পূর্বক) উৎসে আয়কর কর্তনের পর বেতন ভাতা পরিশোধের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করার জন্য মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ করছি।

স্বাক্ষরিত

মোঃ আবদুর রহমান খান এফসিএমএ

প্রাপক

জনাব আবু তাহের মো: মাসুদ রানা

সচিব

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

 প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

 বাজেট ও অডিট শাখা 

বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।

www.mopme.gov.bd

স্মারক নং-৩৮.০০.০০০০.০০৬.২০.১৬০.২২.৩৬৩

তারিখ: ৩১ আশ্বিন ১৪৩২

১৬ অক্টোবর ২০২৫

বিষয়: আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ৬৬(৩) অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের বেতন আয় হতে উৎস ক সংক্রান্ত।

সূত্র: চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ঢাকা এর আধা সরকারি পত্র নং- -০৮.০০.০০০০.০১১.৯৯.০০.২৫-১৬৮, তারিখ: অক্টোবর ২০২৫।

উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রস্থ পত্রের মর্মানুযায়ী চিফ একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসারকে করযোগ্য বেতন ভাতাদি পরিশোধের ক্ষেত্রে অন্য কোন উৎস হতে অগ্রিম পরিশোধ হয়ে থাকলে তা সমন্বয়পূর্বক উৎসে আয়কর কর্তনের পর বেতন ভাতা পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

সংযুক্তি: বর্ণনা মোতাবেক- ১ (এক) পাতা।

স্বাক্ষরিত

(ডা. মোঃ মাহফুজুল হক)।

উপসচিব (বাজেট ও অডিট)