৪+ বয়সি ও ৫+ বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক সহায়িকা
৪+ বয়সি ও ৫+ বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক সহায়িকা
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ের মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের নিবিড় যোগসূত্র ও গুরুত্ব বিবেচনা করে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এ ৪+৩৫+ বয়সি শিশুদের জন্য পর্যায়ক্রমে ২ বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণের বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ অনুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত কর্মপরিকল্পনায় ৪+ বয়সি শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারিত করার নির্দেশনা আছে। উল্লেখ্য যে ইতোমধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক "জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি" প্রণয়ন করা হয়েছে। এই রূপরেখার আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ৪+ ও ৫+ বয়সি শিশুদের জন্য দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২২ প্রণয়ন করেছে। দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২২ অনুসারে মানসম্পন্ন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য আলাদাভাবে ৪+ ও ৫+ বয়সি শিশুদের জন্য শিখন-শেখানো সামগ্রী প্রণয়ন করা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত শিশুর প্রারম্ভিক শিখন ও বিকাশের আদর্শিক মান (Early Learning and Development Standards), জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এবং প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২২ অনুসরণ করে ৪+ বয়সি শিশুদের জন্য ৯টি শিখনক্ষেত্র ও তদসংশ্লিষ্ট যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বয়সি শিশুরা যেন আনন্দময় পরিবেশে নির্ধারিত যোগ্যতাসমূহ অর্জন করতে পারে, সেই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কর্তৃক সরকারি ও বেসরকারি সদস্যদের নিয়ে গঠিত কমিটির সহায়তায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এই বয়সি শিশুদের জন্য শিখন-শেখানো সামগ্রী প্রণয়ন করেছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাত্ব শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে এই শিখন-শেখানো সামগ্রী যেন সঠিকভাবে ব্যবহার করে প্রাক প্রাথমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সেই জন্য এই শিক্ষক সহায়িকাটি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই সহায়িকায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ২০২২-এ বর্ণিত ৯টি শিখনক্ষেত্রের আওতায় বিভিন্ন যোগ্যতা অর্জনের অনুকূল সহজ কার্যক্রম এবং সংগতিপূর্ণ চিত্র সন্নিবেশ করা হয়েছে। বিষয়বস্তু, ছবি, শব্দ ও বাক্য সন্নিবেশের ক্ষেত্রে শিশুদের বয়স, সামর্থ্য, মেধা ও গ্রহণক্ষমতা যেমন বিবেচনা করা হয়েছে তেমনি বৈচিত্র্যময়তার দিকেও লক্ষ রাখা হয়েছে। শিশুর শিখন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে ৪+ বয়সি শিশুদের জন্য খেলা ও কাজভিত্তিক আকর্ষণীয় এবং অংশগ্রহণমূলক শিখন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে; যার মাধ্যমে শিশুর আনন্দময় শিখন নিশ্চিত করা যাবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, শিক্ষক এই সহায়িকাটি অনুসরণ করে শিশুদের শারীরিক ও পেশীজ, ভাষ্য ও যোগাযোগ, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক ও আবেগিক বিকাশের বিভিন্ন দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করতে পারবেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনা ও পরামর্শে এই শিক্ষক সহায়িকা প্রণয়ন, সম্পাদনা, যৌক্তিক মূল্যায়ন এবং মুদ্রণ ও প্রকাশনার বিভিন্ন পর্যায়ে যাঁরা সহায়তা করেছেন তাঁদের প্রতি জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এবং ইউনিসেফকে তাদের সার্বিক সহায়তার জন্য। এছাড়া এই শিক্ষক সহায়িকার উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকার জন্য রুম টু রিড বাংলাদেশ এবং সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। শিক্ষক সহায়িকাটিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ও মুদ্রণজনিত ত্রুটি-বিচ্যুতি মুক্ত রাখার সর্বোচ্চ প্রয়াস সত্ত্বেও কিছু অনিচ্ছাকৃত ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। পরিশেষে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে কোমলমতি শিশুদের জন্য এ শিক্ষক সহায়িকা প্রণয়ন করা হয়েছে তা অর্জিত হলে আমাদের সকলের প্রচেষ্টা সার্থক হবে। প্রফেসর মোঃ ফরহাদুল ইসলাম চেয়ারম্যান
NCTB
No comments
Your opinion here...