রীটকারী প্রধান শিক্ষকদের গ্রেড উন্নয়ন ইস্যুতে পুনরায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ
রীটকারী প্রধান শিক্ষকদের গ্রেড উন্নয়ন ইস্যুতে পুনরায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ।
সংবাদ প্রতিবেদন
হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ৪৫ প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত: কার্যকর হবে ২০১৪ সাল থেকে
ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫:
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন নিয়ে দীর্ঘদিনের আইনি জটিলতার অবসান ঘটল। মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং-৩২১৪/২০১৮ এর রায় বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তাদের বেতন ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইংয়ের মতামতের ভিত্তিতে এই কার্যক্রম ০৯ মার্চ ২০১৪ সাল থেকে কার্যকর করার সুপারিশ করা হয়েছে।
পটভূমি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক ২০১৮ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তারা দাবি জানান, ৩য় শ্রেণি থেকে ২য় শ্রেণিতে উন্নীত হয়ে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে ১০ম গ্রেডে তাদের বেতন কার্যকর করার পাশাপাশি সরকারি গেজেটে গেজেটেড অফিসার হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায়ে প্রধান শিক্ষকদের দাবি মঞ্জুর করেন এবং সরকারকে নির্দেশ দেন তাদের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে। তবে “সিলেকশন গ্রেড” ও “টাইম স্কেল” সুবিধা বিষয়ে পরবর্তী পর্যায়ে আদালত রায়ে আংশিক সংশোধনী আনেন।
সরকারপক্ষ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলেও ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। এরপর ২০২৫ সালের মার্চে “সিলেকশন গ্রেড” এবং “টাইম স্কেল” সুবিধা সীমিত করার মাধ্যমে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের ভিত্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের ১৯ জুন এক চিঠিতে ৪৫ প্রধান শিক্ষকের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে সম্মতি প্রদান করে। তবে কার্যকরের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়, যেহেতু আদালত কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেনি।
আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইং থেকে স্পষ্ট মতামত দেওয়া হয়েছে যে, বেতন ০৯ মার্চ ২০১৪ সাল থেকে ১০ম গ্রেডে কার্যকর করা যেতে পারে। এর ফলে ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে যাচ্ছেন।
বর্তমান অবস্থা
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে অর্থ বিভাগের সম্মতি চাইছে। সম্মতি মিললে ৪৫ জন প্রধান শিক্ষককে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে ১০ম গ্রেডে বেতন কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
বিদ্যালয়-২ শাখা
www.mopme.gov.bd
স্মারক নং: ৩৮,০০,০০০০,০০৮,০২.০১৩.২১-৪১৫
তারিখঃ ০৮ আশ্বিন ১৪৩২
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিষয়: মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত রিট পিটিশন নম্বর-৩২১৪/২০১৮ এর রায় বাস্তবায়নের নিমিত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ গ্রেড কোন তারিখ তারিখ থেকে কার্যকর হবে তা স্পষ্টীকরণে আইনগত মতামত প্রদান প্রসঙ্গে।
সূত্র: আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পত্র নং-১০,০০,০০০০,০০০,১৩৫.৩৩.০০৫১.২৫-২১৯, তারিখ: ১৮.০৯.২০২৫।
উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রস্থ পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫জন প্রধান শিক্ষক শিক্ষকদের বেতন ৩য় শ্রেণি থেকে ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করে ১১তম (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) ও ১২তম (প্রশিক্ষণবিহীন) নির্ধারণের তারিখ ০৯.০৩.২০১৪ তারিখ থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত ও গেজেটেড কর্মকর্তা ঘোষণা করে সরকারি গেজেট প্রকাশের দাবীতে মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট পিটিশন নং ৩২১৪/২০১৮ দায়ের করেন (সংযুক্তি-১)। মহামান্য আদালত কর্তৃক ২৫.০২.২০১৯ তারিখ নিম্নরূপ আদেশ প্রদান করা হয় (সংযুক্তি-২):
"The respondents are directed to grant the Grade-X scale to the petioners and to notify there names in the official gazette as class-ii (Gazetted Officer) Head Teacher of the Government Primary School and also to grant the benifit of selection grade and time scale on completion of 4, 8 and 12 years service, respectivly, expeditiously."
২। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের ২৫.০২.২০১৯ তারিখের রায়ের বিপরীতে সরকার পক্ষ মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে Civil Petition for Leave to Appeal No. ৩৫৬৪/২০১৯ দায়ের করে। আপীল বিভাগ ০৬.০১.২০২২ তারিখে হাইকোর্ট ডিভিশনের ২৫.০২.২০১৯ তারিখের রায় বহাল রাখেন। সরকার পক্ষ আপীলের আদেশের বিরুদ্ধে Civil Review Petition ১২৪/২০২২ দায়ের করেন। মহামান্য আদালত ১৩/০৩/২০২৫ তারিখে নিম্নরূপ আদেশ প্রদান করেন (সংযুক্তি-৩):
"The judgment and order dated 25.02.2019 passed by the High Court Division in writ petion no. 3214/2018 is modified to the extent that the writ petitioners respondents shall not be entitled to selection grade and time scale benefits upon completion of 4, 8 and 12 years of service. However, this shall not bar them from receiving future benefits is selection grade and time scale are reintroduced."
৩। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ০৮.০৫.২০২৫ তারিখের ২৪৫ নম্বর স্মারকে প্রেরিত পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১৯.০৬.২০২৫ তারিখে ০৭,০০,০০০০,০০০,১৬১,০৪,০০০৭,২৫-৯০ সংখ্যক স্মারক পত্রের মাধ্যমে রিট পিটিশন নং ৩২১৪/২০১৮ এর আবেদনকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন বিদ্যমান গ্রেড-১১ থেকে গ্রেড-১০ এ উন্নীত করার সম্মতি জ্ঞাপন করা হয় (সংযুক্তি-৪)।
81 রিট পিটিশন ৩২১৪/২০১৮ এর আবেদনকারীগণ ১০ম গ্রেড কার্যকরের তারিখ ০৯.০৩.২০১৪ থেকে দাবী করলেও মহামান্য আদালত রায় কার্যকরের কোন সুনির্দিষ্ট তারিখ প্রদান করেননি। এ পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেড কোন তারিখ থেকে কার্যকর হবে এ বিষয়ে স্পষ্টিকরণে আইনগত মতামত গ্রহণের জন্য বিজ্ঞ সলিসিটর, সলিসিটর উইং, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয় (কপি সংযুক্ত)।
তদপ্রেক্ষিতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক উল্লিখিত বিষয়ে আইনগত মতামত প্রদান করা হয়েছে (কপি সংযুক্ত)। উক্ত মতামতের নির্দেশনা নিম্নরূপ:
"রিট পিটিশন নং-৩২১৪/২০১৮ এর রায়ের পর্যবেক্ষণ ও আদেশসমূহের মর্মানুযায়ী আবেদনকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ম গ্রেড বিগত ০৯/০৩/২০১৪ খ্রি: তারিখ হতে কার্যকর করা যেতে পারে এ বিভাগ মনে করে।"
০২। এমতাবস্থায়, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে প্রাপ্ত মতামত অনুযায়ী রিট পিটিশন নং ৩২১৪/২০১৮ এর আবেদনকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ম গ্রেড বিগত ০৯/০৩/২০১৪ খ্রিঃ তারিখ হতে কার্যকর করার বিষয়ে মতামত/সম্মতি প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
সংযুক্তি: বর্ণনামতে।
স্বাক্ষরিত
রেবেকা সুলতানা
যুগ্মসচিব
সচিব
অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।
No comments
Your opinion here...