দাফন অনুদান নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করল বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড
দাফন অনুদান নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করল বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড
ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড দাফন অনুদানের আবেদন দাখিলের সময়সীমা, প্রাপক নির্ধারণ এবং অনুদান নিষ্পত্তি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এ সংস্থা বৃহস্পতিবার এক পরিপত্রে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।
পরিপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইন ২০০৪ এবং বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (তহবিলসমূহ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) বিধিমালা ২০০৬-এ কল্যাণ তহবিল হতে প্রদেয় অনুদান ও যৌথবীমার আবেদন দাখিলের সময়সীমা নির্ধারিত থাকলেও দাফন অনুদানের ক্ষেত্রে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছিল। এ সমস্যা নিরসনে দাফন অনুদানের আবেদন দাখিলেও একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
অর্থাৎ কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর মৃত্যুর ছয় মাসের মধ্যে দাফন অনুদানের আবেদন জমা দিতে হবে। যদি সময়সীমার মধ্যে আবেদন জমা না পড়ে, তবে মৃত কর্মচারীর অফিস প্রধানের প্রতিস্বাক্ষরসহ বিলম্বের যৌক্তিক কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।
এছাড়া দাফন অনুদান প্রদান করা হবে মৃত কর্মচারীর পরিবারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্যকে। তবে যদি পরিবারের কেউ না থাকে, তবে যিনি প্রকৃতপক্ষে দাফন বা সৎকারের খরচ বহন করেছেন, তিনিও অনুদান পাওয়ার যোগ্য হবেন। তবে এ ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রত্যয়ন এবং মৃত কর্মচারীর অফিস প্রধানের প্রতিস্বাক্ষর বাধ্যতামূলক।
পূর্ববর্তী নিয়ম অনুযায়ী কল্যাণ তহবিল ও যৌথবীমার আবেদন নিষ্পত্তি হতো আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী, আর দাফন অনুদান নিষ্পত্তি হতো মৃত কর্মচারীর সর্বশেষ কর্মস্থলের ঠিকানা অনুযায়ী। এতে পরিবারকে একাধিক কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হতো এবং ভোগান্তিতে পড়তে হতো। নতুন পরিপত্র অনুযায়ী এখন থেকে তিন ধরনের অনুদানই (কল্যাণ তহবিল, যৌথবীমা ও দাফন অনুদান) নিষ্পত্তি হবে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সর্বশেষ কর্মস্থলের ঠিকানা অনুযায়ী কল্যাণ বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কার্যালয় থেকে।
অনুদান উত্তোলনের সুবিধার্থে আবেদনকারী তার পছন্দমতো সোনালী ব্যাংকের শাখার নাম উল্লেখ করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট কল্যাণ বোর্ড কার্যালয় কল্যাণ ভাতার কার্ড সোনালী ব্যাংকের কর্পোরেট শাখায় পাঠাবে, পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর নির্বাচিত শাখায় তা পাঠাবে।
স্বাক্ষরিত পরিপত্রে অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক শিরিন আখতার এ নির্দেশনা জারি করেন।
👉 এ নির্দেশনা কার্যকর হলে মৃত কর্মচারীদের পরিবারকে একই সঙ্গে কল্যাণ তহবিল, যৌথবীমা ও দাফন অনুদান প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ভোগান্তি কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড
১ম-১২তলা সরকারি অফিস ভবন (১১তলা)
সেগুনবাগিচা, ঢাকা।
www.bkkb.gov.bd
নং ০৫.৮১,০০০০,০০১.০১.০০৭.০২(খন্ড-৩). ১৩৮
তারিখ: ১০/০৯/২০১৫খ্রি.।
পরিপত্র
বিষয়: দাফন অনুদানের আবেদন দাখিলের সময়সীমা ও অনুদান প্রাপক সম্পর্কে স্পষ্টীকরণ এবং কল্যাণ তহবিল হতে প্রদেয় অনুদান, যৌথবীমা ও দাফন অনুদানের আবেদন নিষ্পত্তি সংক্রান্ত।
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইন, ২০০৪ এবং বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (তহবিলসমূহ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) বিধিমালা, ২০০৬ এ কল্যাণ তহবিল হতে প্রদেয় অনুদান এবং যৌথবীমার জন্য আবেদন দাখিলের সময়সীমা এবং অনুদান প্রাপক সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট উল্লেখ থাকলেও দাফন/অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুদানের জন্য আবেদন দাখিলের সময়সীমা এবং অনুদান, প্রাপক সম্পর্কে সুনিদিষ্ট উল্লেখ না থাকায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জটিলতা নিরসনকল্পে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসৃত হবে:
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইন, ২০০৪ এবং বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (তহবিলসমূহ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) বিধিমালা, ২০০৬ এ কল্যাণ তহবিল হতে প্রদেয় অনুদান এবং যৌথবীমার আবেদন দখিলের জন্য যে সময়সীমা ও পদ্ধতি বর্ণিত আছে, তা অনুসরণ করতে হবে, অর্থাৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মৃত্যুর ছয় মাসের মধ্যে আবেদন দাখিল করতে হবে। বিলম্বের ক্ষেত্রে মৃত কর্মচারীর অফিস প্রধানের প্রতিস্বাক্ষরে যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে নির্ধারিত ফরমের পরবর্তী সংস্করণে সংশ্লিষ্ট কলামে এ বিষয়টি মুদ্রিত করা হবে। বর্তমানে প্রচলিত নির্ধারিত ফরমের নির্দিষ্ট স্থানে একটি সীলমোহর তৈরি করে ব্যবহার যেতে পারে;
কল্যাণ তহবিল হতে প্রদেয় অনুদান এবং যৌথবীমার মতো দাফন অনুদান কর্মচারীর পরিবারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য/সদস্যদেরকে প্রদান করতে হবে; তবে মৃত কর্মচারীর পরিবারের কোন সদস্য না থাকলে সেক্ষেত্রে তাঁর দাফন বা সৎকারের জন্য প্রকৃতপক্ষে যিনি ব্যয়বহন করে থাকেন তাঁকে এ অনুদান প্রদান করা যাবে। তবে শর্ত থাকে যে, এক্ষেত্রে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি কর্তৃক প্রত্যায়িত এবং মৃত কর্মচারীর অফিস প্রধান কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত হতে হবে।
০২। বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড এর ০৫/০৩/২০০৯ খ্রি. তারিখের বাককবো/কত-২০প্র/২০০৬-১৫৩০ নং পত্র অনুযায়ী কল্যাণ তহবিল ও যৌথবীমার দাবীর অনুদান আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী কল্যাণ বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কার্যালয় হতে নিষ্পত্তি করা হয় কিন্তু দাফন অনুদান মৃত কর্মচারীর সর্বশেষ কর্মস্থলের ঠিকানা অনুযায়ী কল্যাণ বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কার্যালয় হতে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। ফলে মৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবারকে কল্যাণ তহবিল, যৌথবীমা এবং দাফন অনুদানের জন্য দুই অফিসে যোগাযোগ করতে হয়। এতে তাঁরা হয়রানীর সম্মুখীন হন এবং ভোগান্তিতে পড়েন। এ অবস্থা নিরসনকল্পে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সর্বশেষ কর্মস্থল অনুযায়ী কল্যাণ বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কার্যালয় হতে কল্যাণ তহবিল হতে প্রদেয় অনুদান এবং যৌথবীমা এবং দাফন অনুদানের আবেদন নিষ্পত্তি হবে। কল্যাণ তহবিল হতে প্রদেয় অনুদান উত্তোলনের ক্ষেত্রে আবেদনকারী তাঁর সুবিধামত সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার নাম আবেদনে উল্লেখ করবেন। উক্ত আবেদনসমূহ নিষ্পত্তিকারী কল্যাণ বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কার্যালয় কল্যাণ ভাতার কার্ডসমূহ সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্পোরেট শাখায় যথারীতি প্রেরণ করবে। সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্পোরেট শাখা অতঃপর কল্যাণ ভাতার কার্ডসমূহ বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রেরণ করবে।
স্বাক্ষরিত
(শিরিন আখতার)
অতিরিক্ত সচিব
মহাপরিচালক।
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
No comments
Your opinion here...