ad

প্রাথমিক স্তরে নতুন মূল্যায়ন কাঠামো ও স্বাস্থ্যবিধি অন্তর্ভুক্তি: শিক্ষার মানোন্নয়নে বড় পদক্ষেপ

Views



প্রাথমিক স্তরে নতুন মূল্যায়ন কাঠামো ও স্বাস্থ্যবিধি অন্তর্ভুক্তি: শিক্ষার মানোন্নয়নে বড় পদক্ষেপ

👉প্রাথমিক স্তরে ১ম ও ২য় শ্রেণিতে ৫০% ধারাবাহিক ও ৫০% সামষ্টিক মূল্যায়ন চালু হবে

👉পাঠ্যপুস্তকে স্বাস্থ্যবিধি ও বয়ঃসন্ধি বিষয়ক কনটেন্ট পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন মূল্যায়ন কাঠামো বাস্তবায়ন করা হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ম ও ২য় শ্রেণিতে ৫০ শতাংশ ধারাবাহিক এবং ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যকর হবে। এছাড়া ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিক মূল্যায়ন ৩০ শতাংশ এবং সামষ্টিক মূল্যায়ন ৭০ শতাংশ হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে।

২৬ আগস্ট ২০২৫ মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সচিব আবু তাহের মো: মাসুদ রানা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় মাননীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারসহ এনসিটিবি, নেপ এবং ডিপিই’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মূল্যায়ন কাঠামো নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা

সভায় জানানো হয়, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ধারাবাহিক মূল্যায়নের পাশাপাশি সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রবর্তনের বিষয়টি অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবার প্রত্যাশা। নেপের গবেষণায় দেখা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিক পরীক্ষার অভাবে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যায়। এ কারণে গুণগত মান নিশ্চিত করতে এবং অভিভাবকদের আস্থা ফেরাতে নতুন মূল্যায়ন কাঠামো জরুরি বলে অভিমত দেওয়া হয়।

অন্যদিকে এনসিটিবি’র প্রতিনিধি উল্লেখ করেন, বিদ্যমান পাঠ্যপুস্তক মূলত চিত্রভিত্তিক ও কর্মমুখী হওয়ায় ১ম ও ২য় শ্রেণিতে আনুষ্ঠানিক প্রশ্নপত্র ভিত্তিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কিছুটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। তবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, পাঠ্যবইয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন সম্ভব।

স্বাস্থ্যবিধি ও বয়ঃসন্ধি বিষয়ক কনটেন্ট যুক্ত হচ্ছে

সভায় পাঠ্যপুস্তকে স্বাস্থ্যবিধি আধেয় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবও গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চতুর্থ শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞানে "স্বাস্থ্যবিধি" এবং পঞ্চম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞানে "বয়ঃসন্ধি" বিষয়ক অধ্যায় সংযোজন ও পরিমার্জন করা হবে। এ কাজে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী-কে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

সভার গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ

১. ১ম ও ২য় শ্রেণিতে ৫০% ধারাবাহিক ও ৫০% সামষ্টিক মূল্যায়ন, আর ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণিতে ৩০% ধারাবাহিক ও ৭০% সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যকর হবে।
২. ১ম ও ২য় শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য প্রশ্নের ধরন নির্ধারণ করবে এনসিটিবি, ডিপিই ও নেপ।
৩. মূল্যায়ন নির্দেশিকা-২০২৬ প্রণয়ন এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ (পরিমার্জিত ২০২৫) অনুযায়ী এনসিসিসি’র অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
৪. ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তীকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বই পরিমার্জনের কাজে নিয়োগ দেওয়া হবে।
৫. পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রণীত ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ের পান্ডুলিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে অনুমোদন নিতে হবে।

সভা শেষে সচিব আবু তাহের মো: মাসুদ রানা বলেন, “২০২৫ শিক্ষাবর্ষের অবশিষ্ট মূল্যায়ন প্রথম প্রান্তিকের অনুসৃত পদ্ধতিতে সম্পন্ন করতে হবে। একইসাথে আজকের সিদ্ধান্তসমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে।”

 গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

 প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

 বিদ্যালয়-১ অধিশাখা

www.mopme.gov.bd

বিষয়: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রাথমিক স্তরের মূল্যায়ন নির্দেশিকা ২০২৫ অনুমোদন এবং পাঠ্যপুস্তকে স্বাস্থ্যবিধি আধেয় অন্তর্ভুক্তকরণ সংক্রান্ত সভার কার্যবিবরণী।

সভাপতি: জনাব আবু তাহের মো: মাসুদ রানা সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

সভার তারিখ ও সময়: ২৬/০৮/২০২৫খ্রি: তারিখ মঙ্গলবার

সভার স্থান: মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ

সভাপতি উপস্থিত সকল সদস্যকে স্বাগত জানিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি মাননীয় উপদেষ্টা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়-কে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অতঃপর তিনি সভার আলোচ্য বিষয়সমূহ উপস্থাপন করার জন্য অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) কে অনুরোধ করেন। অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) জানান যে, ১৫ মে ২০২৫ তারিখ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এর সভাপতিত্বে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রাথমিক স্তরের মূল্যায়ন নির্দেশিকা ২০২৫ পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এনসিটিবি-কে মূল্যায়ন নির্দেশিকা ২০২৫ সংশোধন করে এ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য বলা হয়। সে প্রেক্ষিতে এনসিটিবি হতে কতিপয় বিষয় উল্লেখপূর্বক এ মন্ত্রণালয়ে একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। এনসিটিবি হতে প্রাপ্ত উক্ত পত্রের উপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) এর মতামত চাওয়া হয়। এনসিটিবি-র বিবেচ্য পত্র, ডিপিই এবং নেপের মতামত নিয়ে আলোচনার জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও পাঠ্যপুস্তকে স্বাস্থ্যবিধি আধেয় অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাবও এ সভায় আলোচনা করা হবে মর্মে তিনি জানান। পরবর্তীতে সভায় মূল্যায়ন নির্দেশিকা ২০২৫ সংশোধন সংক্রান্ত এনসিটিবি-র বিবেচ্য পত্র, ডিপিই ও নেপের মতামত এবং পাঠ্যপুস্তকে স্বাস্থ্যবিধি আধেয় অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় এবং বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

০২। সভায় জানানো হয় যে, এনসিটিবি কর্তৃক প্রেরিত পত্রে পর্যালোচনা সভার সিদ্ধান্ত 'ক' অনুযায়ী প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৫০ শতাংশ আনুষ্ঠানিক সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রবর্তন এবং ধারাবাহিক ও সামষ্টিক মূল্যায়নের অংশ নির্ধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৫০ শতাংশ ধারাবাহিক এবং ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন এর জন্য একমত পোষণ করে। এ বিষয়ে এনসিটিবি-এর প্রতিনিধি জনাব আফসানা আইয়ুব (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ) সভায় জানান যে, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৫০ শতাংশ ধারাবাহিক এবং ৫০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রবর্তন করতে হলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ (পরিমার্জিত ২০২৫) এর মূল্যায়ন অংশে প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করতে হবে এবং এনসিসিসি কর্তৃক অনুমোদন নিতে হবে। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, বিদ্যমান শিক্ষাক্রমকে ভিত্তি করে ১ম থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকসমূহ মূলতঃ চিত্র সম্বলিত, Activity (কর্মতৎপরতা) নির্ভর এবং ধারাবাহিক মূল্যায়নের উপযোগী করে প্রণয়ন করা হয়েছে। এ অবস্থায়, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে আনুষ্ঠানিক সামষ্টিক মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে (বিশেষতঃ ১ম ও ২য় শ্রেণিতে) তথ্যনির্ভর ও মুখস্থ জ্ঞান যাচাইয়ে জটিলতা দেখা দিবে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক স্তরে (বিশেষতঃ ১ম ও ২য় শ্রেণিতে) অনুষ্ঠিত দুইটি প্রান্তিকের সামষ্টিক মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি শিশু শিক্ষার্থীদের শিখন নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষকেন্দ্রিক কার্যক্রমে অধিক সময় বরাদ্দের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদানের অনুরোধ জানান।

০৩। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) এর প্রতিনিধি জনাব মাহবুবুর রহমান (সহকারী বিশেষজ্ঞ) সভাকে অবহিত করেন যে, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) কর্তৃক সম্পাদিত গবেষণায় দেখা যায় যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৩৭.৭৫% শিক্ষার্থী চলে যায়। যেখানে কারণ হিসেবে পরীক্ষা না থাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও অভিভাবকগণ মনে করেন গাঠনিক মূল্যায়ন এর অংশ হিসেবে শিক্ষকগণ বোর্ডে দুই/তিনটা প্রশ্ন লিখে দেন, শিক্ষার্থীবৃন্দ তাদের খাতায় উত্তর লিখে জমা দেয়; যা আনুষ্ঠানিক পরীক্ষার মত হয় না বিধায় শিক্ষার্থীরা কম গুরুত্ব প্রদান করে। তিনি আরো বলেন যে, এনএসএ-২০২৩ অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৫৫.৭০% এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৪৪.৩০%। কারিকুলাম অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ম ও ২য় শ্রেণিতে গাঠনিক মূল্যায়ন করা হলেও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সামষ্টিক মূল্যায়ন বিদ্যমান। সে প্রেক্ষিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম থেকে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত ৫০% ধারাবাহিক ও ৫০% সামষ্টিক মূল্যায়ন এবং ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণির জন্য ৩০% ধারাবাহিক ও ৭০% সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যকর করার জন্য জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) মতামত প্রদান করেছে মর্মে তিনি জানান।

০৪। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি এন্ড অপারেশন) সভায় বলেন যে, বিদ্যমান শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তকসমূহ প্রণীত হলেও সামষ্টিক মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র প্রণয়নে কোন সমস্যা নেই। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন যে, বিদ্যমান কারিকুলাম যে সময়ে প্রণয়ন করা হয়েছে সে সময় হতে বর্তমানে বাস্তবতার নিরীখে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। তিনি বলেন যে, অভিভাবকসহ সকলেই আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তনের পক্ষে একমত পোষণ করেন।

০৫। পাঠ্যপুস্তকে স্বাস্থ্যবিধি আধেয় অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব সভায় উপস্থাপন করা হলে এনসিটিবি-এর প্রতিনিধি অধ্যাপক মাফরুহা নাজনীন, (ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ, এনসিটিবি) সভাকে অবহিত করেন যে, পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষাক্রম 'স্বাস্থ্যবিধি' বিষয়টি চতুর্থ শ্রেণিতে এবং 'বয়ঃসন্ধি' বিষয়টি পঞ্চম শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরো জানান যে, চতুর্থ শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তক লেখার কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং পঞ্চম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তক লেখার কাজ চলমান রয়েছে। তবে চতুর্থ শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধন সম্ভব মর্মে তিনি জানান। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ের এ দুইটি অধ্যায় সংক্রান্ত প্রাপ্ত রাইট-আপ যাচাই-বাছাই করে এবং ইতোমধ্যে লিখিত কনটেন্টের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে শ্রেণি উপযোগী করে পরিমার্জন করা যেতে পারে মর্মে সভায় আলোচনা করা হয়। সভায় উপদেষ্টা মহোদয় বাংলাদেশে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথজলি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী-কে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বই পরিমার্জনের কাজে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োজিত করা যেতে পারে মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন।

০৬। সভায় উপস্থিত মাননীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আরো বলেন যে, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা পদ্ধতি একটি কার্যকর পন্থা। যে কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যতীত অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে সারা বছর বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম থেকে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত ৫০% ধারাবাহিক ও ৫০% সামষ্টিক মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রবর্তন যৌক্তিক মর্মে তিনি মত প্রকাশ করেন। তিনি আর বলেন যে, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য শিশুদের ছোটবেলা হতেই বিভিন্ন ধরণের সংক্রামক এবং অসংক্রামক রোগ সম্পর্কে অবহিত করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ে অন্তর্ভূক্ত 'স্বাস্থ্যবিধি' এবং 'বয়ঃসন্ধি' সংক্রান্ত অধ্যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে যথাযথভাবে পরিমার্জন করা প্রয়োজন।

০৭। সভাপতি বলেন যে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের অবশিষ্ট মূল্যায়ন কার্যক্রম প্রথম প্রান্তিকের নজির অনুসরণে সম্পন্ন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন যে, আজকের সভার আলোচনা অনুযায়ী গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রণীত ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ের পান্ডুলিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে অনুমোদন নিতে হবে।

০৮। সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিম্নরূপ সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়:

৮.১ মন্ত্রণালয়ের ইতঃপূর্বের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ম ও ২য় শ্রেণিতে ধারাবাহিক মূল্যায়ন ৫০% ও সামষ্টিক মূল্যায়ন ৫০% এবং ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিক মূল্যায়ন ৩০% ও সামষ্টিক মূল্যায়ন ৭০% হিসেবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

বাস্তবায়নে: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

৮.২ ১ম ও ২য় শ্রেণিতে ৫০% সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য পাঠ্যবইয়ের সাথে সংগতি রেখে মূল্যায়নের প্রশ্নের ধরন নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।

বাস্তবায়নে: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)।

৮.৩ মূল্যায়ন নির্দেশিকা-২০২৬ প্রণয়নের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ (পরিমার্জিত ২০২৫) এর মূল্যায়ন অংশে প্রয়োজনীয় পরিমার্জনপূর্বক এনসিসিসি-এর অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।

বাস্তবায়নে: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)

৮.৪ ডাঃ সৌমিত্র চক্রবর্তী-কে বিদ্যমান বিধি-বিধানের আলোকে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বই পরিমার্জনের কাজে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে এনসিটিবি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

বাস্তবায়নে: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)

৮.৫ পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রণীত ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ের পান্ডুলিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে এনসিসিি এর অনুমোদন নিতে হবে।

বাস্তবায়নে: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)

৯। সভায় আর কোন আলোচনা না থাকায় সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

স্বাক্ষরিত

(আবু তাহের মো: মাসুদ রানা)

সচিব 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। 





No comments

Your opinion here...

Theme images by fpm. Powered by Blogger.