সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করল মন্ত্রণালয়
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করল মন্ত্রণালয়
👉সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা বৈষম্যমূলক নয়: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
ঢাকা, ২ আগস্ট ২০২৫:
'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা' নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে, এ পরীক্ষা কোনোভাবেই বৈষম্যমূলক নয় বরং এটি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আর্থিক প্রণোদনার অংশ।
বিবৃতিতে জানানো হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে শুধু পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য চালু রয়েছে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা’। এই পরীক্ষা মূলত নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য একটি প্রণোদনা হিসেবে কাজ করছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত 'কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন বৃত্তি পরীক্ষা' চালু রেখেছে, যেখানে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে না। এই কারণে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আলাদা বৃত্তি পরীক্ষার দাবি ওঠে, যার ভিত্তিতেই এ পরীক্ষা চালু করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করার বিষয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭(ক) অনুচ্ছেদ এবং ১৯৯০ সালের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন অনুযায়ী সরকারের দায়িত্ব রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা খাতে 'পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ' চালু না থাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়ানো অভিভাবকদের স্বেচ্ছা সিদ্ধান্ত। ফলে সরকারি বৃত্তি পরীক্ষাকে বৈষম্যমূলক বলা সঠিক নয়।
বিবৃতিটি স্বাক্ষর করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ইনফরমেশন অফিসার আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ সচিবালয়।
'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা' সম্পর্কে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
ঢাকাঃ ২ আগস্ট ২০২৫
সম্প্রতি 'বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ' কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত বক্তব্যের প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। 'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা' প্রসঙ্গে উত্থাপিত এই বক্তব্যের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্যই এ বিবৃতি।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই একটি, শুধুমাত্র ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য 'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা'। বাংলাদেশের শিক্ষা জরিপগুলিতে দেখা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত পরিবারের। পক্ষান্তরে, কিন্ডারগার্টেনে অধ্যয়নরত বেশিরভাগ শিক্ষার্থী তুলনামূলকভাবে স্বচ্ছল পরিবারের। 'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা' এই নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর সন্তানদের শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে একটি আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে।
উল্লেখ্য, কিন্ডারগার্টেনসমূহ তাদের এসোসিয়েশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শুধুমাত্র কিন্ডারগার্টেনসমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য ২য় থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত 'কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন বৃত্তি পরীক্ষা' চালু রেখেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা সে বৃত্তি পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করতে পারে না। এজন্য সেসব শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করার দাবি উত্থাপিত হয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭(ক) অনুচ্ছেদ এবং বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন, ১৯৯০ অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী সকল শিশুর অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে কোন 'পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ' নীতি কার্যকর নেই। যারা নিজেদের সন্তানদের বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে পড়ান, তারা স্বেচ্ছায় তা করেন। এসব বিবেচনায় 'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা' বৈষম্যমূলক, এমন অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা, বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী সকল শিশুর জন্যই উন্মুক্ত।
স্বাক্ষরিত
(আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক)
সিনিয়র ইনফরমেশন অফিসার
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
No comments
Your opinion here...