সহকারী শিক্ষকদের টাইমস্কেল দাবিতে প্রশাসনিক সুপারিশ, সিদ্ধান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতে
সহকারী শিক্ষকদের টাইমস্কেল দাবিতে প্রশাসনিক সুপারিশ, সিদ্ধান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতে
👉সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রদানে সরকারের বিবেচনা: বৈষম্য নিরসনে সুপারিশ
সংবাদ প্রতিবেদন:
ঢাকা, ২ জুলাই ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত বিষয় — ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রদান — অবশেষে সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় এসেছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পত্র জারি হয়েছে, যেখানে বর্তমান বেতন কাঠামো ও পূর্ববর্তী আদেশসমূহের আলোকে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, ২০১৪ সালে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের ১৪তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীনদের ১৫তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালে সকল সহকারী শিক্ষককে ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। তবে, এই স্কেল উন্নীতিকে অনেক ক্ষেত্রেই টাইমস্কেল হিসেবে গণ্য না করে আলাদা উন্নীত স্কেল ধরা হয়েছে। কিন্তু এরপর অনেক শিক্ষক ১০ বছর পূর্ণ করেও উচ্চতর গ্রেড থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তি ও হিসাবরক্ষণ অফিসের বাস্তবায়ন জটিলতা
ময়মনসিংহ জেলার কয়েকটি উপজেলার সহকারী শিক্ষকদের টাইমস্কেল অনুমোদন দেওয়া হলেও তা স্থানীয় হিসাবরক্ষণ অফিসে বাস্তবায়িত হয়নি, কারণ তারা অর্থ বিভাগের অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার ব্যাখ্যায় বলা হয়, উন্নীত স্কেল থেকে ১০ বছর পূর্তির আগে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া যায় না। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলাদা ব্যাখ্যা বা স্পষ্টিকরণের প্রয়োজন রয়েছে।
টাইমস্কেল ও উন্নীত স্কেলের মধ্যে বিভ্রান্তি
প্রতিবেদন অনুসারে, টাইমস্কেল (উচ্চতর স্কেল) এবং উন্নীত স্কেল দুটি ভিন্ন ধরণের সুবিধা। টাইমস্কেল ব্যক্তিগত কর্মজীবনের স্থায়ীত্ব ও কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি, যেখানে উন্নীত স্কেল সার্বজনীন নীতির আলোকে সব সহকারী শিক্ষকের জন্য প্রযোজ্য হয়েছে।
এছাড়া একই পদের জুনিয়র শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দ্রুত বেতন বৃদ্ধির সুবিধা পেলেও, ২০০৮ বা তার পূর্বে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা অনেক সময় উচ্চতর স্কেল না পেয়ে অবসরে যাবেন, যা চরম বৈষম্য তৈরি করে। ফলে সিনিয়র শিক্ষকদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার বাস্তব আশঙ্কা রয়েছে।
সুপারিশ ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিভঙ্গি
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সুপারিশ অনুযায়ী, উন্নীত স্কেল প্রাপ্তির পূর্ব সময় গণনা করে ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে যথাক্রমে ১১তম ও ১৭তম বছরে উচ্চতর গ্রেড (টাইমস্কেল) প্রদানের যৌক্তিকতা রয়েছে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের ২০১৬ ও ২০২১ সালের পরিপত্রে নির্ধারিত বিধানের আলোকে স্পষ্ট দিকনির্দেশনার দাবি জানানো হয়েছে।
সারসংক্ষেপ
এ বিষয়টি শুধুই একটি প্রশাসনিক আদেশ নয়, বরং হাজারো সহকারী শিক্ষকের প্রাপ্য ন্যায্যতার স্বীকৃতি। বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা এবং চাকরি সন্তোষজনকভাবে পরিচালনার স্বীকৃতিস্বরূপ টাইমস্কেল বা উচ্চতর স্কেল প্রদান সময়োপযোগী হয়ে উঠেছে।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব রেবেকা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই পত্রে বিষয়টি যথাযথ বিবেচনায় এনে অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চূড়ান্ত মতামত প্রদান ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
বিদ্যালয়-২ শাখা
www.mopme.gov.bd
স্মারক নং: ৩৮.০০.০০০০.০০৮.১২.০০৭.১৬-৩০৭
তারিখঃ ০২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২
বিষয়: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রদান।
সূত্র: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পত্র নং- ৩৮.০১.০০০০.১৪৫.১২.০০১.২৪-৭৫, তারিখ: ২৭.০৫.২০২৫।
উপর্যুক্ত বিষয়ে সূত্রস্থ পত্রের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ উচ্চতর গ্রেড মঞ্জুরির জন্য আবেদন করেছেন। উক্ত আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যাদি নিম্নে উপস্থাপন করা হলো:
ক. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ৩৮.০০.০৩৫.০০,০০,০১০,২০১৩-১১১ তারিখ: ০৯.০৩.২০১৪ অনুসারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকের বেতন স্কেল ১৫নং থেকে ১৪নং গ্রেডে (টা: ৫২০০-১১২৩৫/-) এবং প্রশিক্ষণবিহীন সহকারী শিক্ষকের বেতন স্কেল ১৬নং গ্রেড থেকে ১৫নং গ্রেডে (টা:৪৯০০-১০৪৫০/) উন্নীত করা হয় (কপি সংযুক্তি-১)। পরবর্তীতে ০৯/০২/২০২০ তারিখে উভয়স্কেল ১৩নং গ্রেডে উন্নীত করা হয় (কপি সংযুক্তি-২)।
খ. জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর ৭(১) ও (২) অনুযায়ী কোন স্থায়ী কর্মচারী পদোন্নতি ব্যতিরেকে একই পদে ১০ (দশ) বছর পূর্তিতে চাকুরি সন্তোষজনক হওয়া সাপেক্ষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১১তম বছরে পরবর্তীতে উচ্চতর গ্রেডে বেতন প্রাপ্য হবেন উল্লেখ আছে। এই ধারা অনুযায়ী ময়মনসিংহ ফুলপুর উপজেলার ৬২ জন সহকারী শিক্ষককে উচ্চতর গ্রেডের আদেশ প্রদান করা হয় কিন্তু স্থানীয় হিসাবরক্ষণ অফিস তা বাস্তবায়ন করেননি। হিসাব মহানিয়ন্ত্রক এর কার্যালয়ের স্মারক নং-০৭,০৩,০০০০.০০৯.৫০, ৮১০.২১.১৫১, তারিখ: ১৪/১১/২০২২ এর (কপি সংযুক্তি-৩) বিবরণ উল্লেখ করেন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ ও পৃষ্ঠাংকন ছাড়া উচ্চতর গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করে আপত্তি প্রদান করেন। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার ০৯ জন সহকারী শিক্ষকের চাকুরিকাল ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেন। শিক্ষকদের আবেদন অনুযায়ী তাদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট মতামত প্রদানের জন্য প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পত্র দেয়া হয়। উক্ত পত্রের আলোকে প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ০৩/০২/২০২৫ তারিখের সিএফও/প্রাগম/নি:-২/বিবিধ/৪১০/৫৭১নং পত্রে (কপি সংযুক্তি-৪) উল্লেখ করেন যে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোন ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত ব্যতিত সহকারী শিক্ষকগণের বেতন স্কেল উন্নীতকরণের তারিখ হতে ১০ বছর পূর্তিতে ০৯/০২/২০৩০ তারিখে পূর্বে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার সুযোগ নাই। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, ময়মনসিংহ কর্তৃক জারীকৃত উচ্চতর গ্রেডের আদেশটি বিধি সম্মত না হওয়ায় আদেশটি বাতিল যোগ্য।
গ. অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থবিভাগ, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন-১ অধিশাখার ১৫ অক্টোবর, ২০২০ খ্রি. তারিখের স্মারক নং ০৭,০০,০০০০.১৬১.৩৮.০০৫.১২-১৪১ অনুযায়ী (কপিসংযুক্তি-৫) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা ০৯/০৩/২০১৪ থেকে ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে বিধায় ৩য় শ্রেণির চাকুরিকালের সাথে ২য় শ্রেণির চাকুরিকাল গণনা করে জাতীয় বেতনস্কেল, ২০০৯ এর ৭(১) নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী টাইমস্কেল প্রাপ্য হবেন না এবং টাইমস্কেল প্রদানের ক্ষেত্রে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য জাতীয় বেতনস্কেল, ২০০৯ এর ৭(১) নং অনুচ্ছেদ এবং ২য় শ্রেণির জন্য কর্মচারীদের জন্য ৭(২)নং অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য উল্লেখ আছে। উক্ত পত্রমতে সহকারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে জাতীয় বেতনস্কেল, ২০০৯ এর ৭(১) নং অনুচ্ছেদ প্রয়োজ্য।
ঘ. জাতীয় বেতনস্কেল, ২০০৯ এর ৭(১) নিম্নরূপ উল্লেখ রয়েছে:
"জাতীয় বেতনস্কেল, ২০০৯ এর টাকা ৪১০০-৭৭৪০ (২০ নং গ্রেড) হইতে টাকা ৮০০০-১৬৫৪০/- (১০ নং গ্রেড) বেতনস্কেল বিশিষ্ট পদের আওতাভুক্ত কর্মচারীগণ একই অথবা সমপর্যায়ের পরস্পর বদলিযোগ্য পদে ৮, ১২ ও ১৫ বৎসর চাকরি পূর্তি এবং চাকরির সন্তোষজনক রেকর্ডের ভিত্তিতে ও এতদসংক্রান্ত প্রচলিত শর্তাদি পূরণ সাপেক্ষে যথাক্রমে ১ম, ২য় ও ৩য় পরবর্তী উচ্চতর বেতনস্কেলে, উচ্চতর স্কেল (টাইম স্কেল) হিসাবে প্রাপ্য হইবেন"
তবে শর্ত থাকে যে একই কর্মচারী পদোন্নতি ব্যতীত সমগ্র চাকরি জীবনে ৩টির অধিক টাইমস্কেল প্রাপ্য হইবেন না। আরও শর্ত থাকে যে সিলেকশন গ্রেড স্কেল এবং উচ্চতর স্কেল (টাইম-স্কেল) যুগপৎভাবে প্রদান সংক্রান্ত অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১০-১১-১৯৯৭ তারিখের অম/অবি (বাস্ত-৩)/ টাইমস্কেল-৩/৯৬ (অংশ)/৭২ (২০০) নং স্মারকে বর্ণিত ব্যাখ্যা বলবৎ থাকিবে।"
ঙ. জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এর বিষয়ে অর্থ বিভাগের স্পষ্টিকরণ পরিপত্র নং ১৭.০০.০০০০.১৬১.০০.০০২.১৬ (অংশ-১) ২৩২, তারিখ:২১.০৯.২০১৬ এর গ(৩) এ উল্লেখ আছে যে "একই পদে কর্মরত কর্মচারী কোন প্রকার উচ্চতর স্কেল (টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড যে নামেই অভিহিত হউক) না পাইয়া থাকিলে সন্তোষজনক চাকুরির শর্তে তিনি ১০
(দশ) বছর চাকুরি পূর্তিতে ১১ তম বছরে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড এবং পরবর্তী ৬ বছরে পদোন্নতি না পাইলে ৭ম বছরে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্য হইবেন।" (সংযুক্তি-৬)।
চ. অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থবিভাগ, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন-১ অধিশাখার ০৯ অক্টোবর, ২০২১ খ্রি. তারিখের স্মারক নং ০৭,০০,০০০০.১৬৫.০৭.০০২.১২-৬০ অনুযায়ী একই পদে কোন কর্মচারীর উন্নীতকরণ প্রক্রিয়ায় কোন উচ্চতর বেতনগ্রেড পেয়ে থাকলে উন্নীত করণের তারিখ হতে ১০ বছর পূর্তিতে জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এ ৭(১) অনুচ্ছেদ মোতাবেক পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড পাবেন উল্লেখ আছে (কপি সংযুক্তি-৭)।
২। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক উল্লিখিত তথ্যাবলি পর্যালোচনান্তে জানান যে, ২০১৪ সালে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকা শিক্ষকদের ১৪ তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীন সহকারী শিক্ষকদের ১৫তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালে উভয়স্কে ১৩ তম গ্রেডে উন্নীত করা হয় অর্থাৎ ১৩ তম গ্রেডটি সহকারী শিক্ষকদের একটি উন্নীত গ্রেড। জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এর বিষে অর্থ বিভাগের স্পষ্টিকরণ পরিপত্র (নং ১৭.০০.০০০০.১৬১.০০.০০২.১৬ (অংশ-১) ২৩২, তারিখ: ২১.০৯.২০১৬)-এর "গ অনুচ্ছেদটি পুন: বিবেচনাপূর্বক সংশোধন করা হলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীত করণে পূর্বের সময় গণনা করে ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রদান করা সম্ভব হবে।
৩। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীতকরণের পূর্বের সময় গণনা করে ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রদানের বিষয়ে নিম্নরূপ যৌক্তিকতা তুলে ধরা হলো:
(ক) সহকারী শিক্ষকদের এ যাবৎকালে ২৯/০৮/২০০৬, ০৯/০৩/২০১৪ ও ০৯/০২/২০২০ খ্রি. ০৩ (তিন) বার বেতন স্কেল উন্নীত করা হয়েছে, উন্নীত স্কেলের জন্য ইতো:পূর্বে কখনোই টাইমস্কেল প্রদান বাধাপ্রাপ্ত হয়নি। এমনকি ০৯/০৩/২০১৪ সালে উন্নীত স্কেল প্রদানের পর ময়মনসিংহ এর স্মারক নং-জেপ্রাশিঅ/ময়মন/টাইমস্কেল/৪১২৬/১, তারিখ-১৩.১২.২০১৫খ্রি. ১ম ও ২য় টাইম স্কেল প্রদান করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ০৯/০২/২০২০ খ্রিষ্টাব্দে উন্নীত স্কেলের পরের আদেশ বাস্তবায়ন হওয়া যুক্তিযুক্ত।
(খ) উন্নীত স্কেল সকল সহকারী শিক্ষকগণ পেয়েছেন, যারা ৩টি টাইমস্কেল পেয়েছেন তারাও ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের মাধ্যমে ১০ম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন এবং ২০২০ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত তারাও ১৩তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে উন্নীত স্কেল ও উচ্চতর গ্রেড দুটির বিষয় আলাদা।
(গ) আবার ০৯.০৩.২০১৪ ও ০৯.০২.২০২০ সালের উন্নীত স্কেলকে উচ্চতর হিসেবে ধরা হলে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকগণ কোন উচ্চতর গ্রেড না পেয়ে ১৩তম গ্রেডে অবসরে যাবেন ফলে একই পদের সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের সাথে চরম বৈষম্য তৈরি হবে। ২০০৮ সালের পূর্ববর্তী নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ ২০০৬ ও ২০১৪ সালের উন্নীত স্কেলে বেতন নির্ধারণের পরও যথারীতি ১ম, ২য় ও ৩য় টাইমস্কেল পেয়েছেন। সে মোতাবেক ০৯.০২.২০২০ সালের উন্নীত স্কেলের পরে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তি যুক্তিযুক্ত।
(ঘ) সহকারী শিক্ষকদের ১৩ তম গ্রেডে উন্নীত স্কেল দেওয়ার কারণে তাদের পদবী ও শ্রেণি পরিবর্তন হয়নি। তাছাড়া সহকারী শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড না দেওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোন আদেশও নেই। সে কারণে ১ম যোগদানের তারিখ থেকে সন্তোষজনক চাকুরীর শর্তে ১০ বছর পূর্তিতে ১১তম বছরে ১ম উচ্চতর গ্রেড এবং ১৬ বছর পূর্তিতে ১৭ তম বছরে ২য় উচ্চতর গ্রেড প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যায়।
৪। এমতাবস্থায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সুপারিশসহ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীতকরণের পূর্বের সময় গণনা করে ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর স্কেল প্রদানের বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে বিনীত অনুরোধ করা হলো।
স্বাক্ষরিত
রেবেকা সুলতানা
যুগ্মসচিব
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
No comments
Your opinion here...