ad

হাওড়-চর-দ্বীপের শিক্ষকদের ঝুঁকি বিবেচনায় ভাতা প্রদানের উদ্যোগ

Views

 

হাওড়-চর-দ্বীপের শিক্ষকদের ঝুঁকি বিবেচনায় ভাতা প্রদানের উদ্যোগ

👉হাওড়/দ্বীপ/চর অঞ্চলে অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীগণকে হাওড়/দ্বীপ/চর ভাতা প্রদান সংক্রান্ত পত্র (২৫.০৫.২৫)।

শিরোনাম:
হাওড়, চর ও দ্বীপ অঞ্চলের স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষক-কর্মচারীদের ভাতা প্রদানে উদ্যোগ: অতিরিক্ত ৭.৫১ কোটি টাকা বরাদ্দের অনুরোধ

প্রতিবেদন:
ঢাকা, ২৫ মে ২০২৫:
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় হাওড়, চর ও দ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কর্মরত স্থানীয় শিক্ষক ও কর্মচারীদেরকে হাওড়/চর/দ্বীপ ভাতা প্রদানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পূর্বে জারিকৃত একটি নির্দেশনা বাতিলসহ অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।

সম্প্রতি জারিকৃত এক অফিস আদেশে (স্মারক নম্বর: ৩৮.০০.০০০০.০০০.০০৮.৯৯.০০০১.১৬.২৬৭) মন্ত্রণালয় জানায়, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি এসআরও এর মাধ্যমে সারাদেশের ১৬টি উপজেলাকে হাওড়, চর ও দ্বীপ উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। অর্থ বিভাগ ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারির এক নির্দেশনায় এই উপজেলাগুলোর কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের জন্য হাওড়/চর/দ্বীপ ভাতা নির্ধারণ করে দেয়। তবে একই স্মারকের ২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়, যারা নিজ উপজেলায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন এবং সেখানেই কর্মরত, তারা এই ভাতা পাবেন না।

এই সিদ্ধান্তের ফলে, ওইসব উপজেলার স্থানীয় শিক্ষক ও কর্মচারীগণ ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন—যা মন্ত্রণালয়ের মতে, অযৌক্তিক এবং ক্ষতিকর। কারণ হিসেবে বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ অনুযায়ী শিক্ষকরা নিজ উপজেলাতেই নিয়োগ পান এবং হাওড়-চর-দ্বীপ অঞ্চলের দুর্গমতা, কাঁচা রাস্তা, নদী ও জলপথ অতিক্রম করে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও কষ্টসাধ্য। বিশেষ করে নারী শিক্ষকদের জন্য এটি আরও চ্যালেঞ্জিং। ফলে ওইসব এলাকায় শিক্ষক পদ দীর্ঘদিন শূন্য থাকে এবং পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঘোষিত ১৬টি হাওড়/চর/দ্বীপ উপজেলায় বর্তমানে ১,৩০৭টি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে। এই অবস্থার উন্নয়নে এবং প্রণোদনা হিসেবে স্থানীয় শিক্ষক/কর্মচারীদের ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিকবার সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক বিশ্লেষণসহ প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়।

বর্তমানে অস্থানীয় শিক্ষক/কর্মচারীদেরকে রাজস্ব বাজেটের আওতায় থেকে হাওড়/চর/দ্বীপ ভাতা দেওয়া হচ্ছে এবং এই খাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩০ কোটি ৩৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে এই ভাতা স্থানীয় শিক্ষক/কর্মচারীদেরকে দিতে হলে অতিরিক্ত ৭ কোটি ৫১ লাখ ৫৯ হাজার ৬০০ টাকা প্রয়োজন হবে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগের ২৬ জানুয়ারি ২০২২ তারিখের স্মারকের ২ নম্বর নির্দেশনা বাতিল করে স্থানীয়দের ভাতা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে এবং প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
বিদ্যালয়-২ শাখা
www.mopme.gov.bd
তারিখ: ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ২৫ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

স্মারক নম্বর: ৩৮.০০.০০০০.০০০.০০৮.৯৯.০০০১.১৬.২৬৭

বিষয়: হাওড়/দ্বীপ/চর অঞ্চলে অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীগণকে হাওড়/দ্বীপ/চর ভাতা প্রদান সংক্রান্ত। সূত্র: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এর স্মারক নং-৩৮.০০৮.০৩১.০০.০০.০২৬.২০১৫-১৪৩, তারিখ: ০৫. ০৩.২০২৫।

উপর্যুক্ত বিষয় সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১৮.০২.২০১৯ তারিখের ০৪.০০.০০০০.৫১২.৩৫.০১১.১৭.৭৬ নং এসআরও ও সারাদেশে ১৬টি উপজেলাকে হাওড়/চর/দ্বীপ উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। অর্থ বিভাগ এর ২৬.০১.২০২২ তারিখের ০৭,০০,০০০০.১৭৩.৪১.০২৭.১৫-১১ নং স্মারকে উক্ত ১৬টি উপজেলায় কর্মরত কর্মচারীগণকে মাসিক হাওড়/চর/দ্বীপ ভাতা প্রাপ্তির হার নির্ধারণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বর্ণিত উপজেলাসমূহে কর্মচারীগণ সংশ্লিষ্ট ভাতা পেয়ে আসছিলেন। পরবর্তীতে অর্থ বিভাগের ২৬.০১.২০২২ তারিখের ০৭,০০,০০০০,১৭৩.৪১.০২৭.১৫-১১ নং স্মারকের ২ নং ক্রমিকে হাওড়/দ্বীপ/চর হিসেবে ঘোষিত উপজেলাসমূহের স্থায়ী বাসিন্দাগণ নিজ উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন এ ভাতা প্রাপ্য হবেন না মর্মে উল্লেখ করা হয়। তদপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দাগণ উক্ত ভাতা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এরই প্রেক্ষিতে এ মন্ত্রণালয় হতে সূত্রোক্ত ১ নং স্মারকে হাওড়/দ্বীপ/চর অঞ্চলে অবস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থানীয় শিক্ষক ও কর্মচারীগণকে হাওড়/দ্বীপ/চর ভাতা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে অর্থ বিভাগের বর্ণিত নির্দেশনা বাতিল করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

০২। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ এর বিধি ৩ এর (৩) অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ স্ব-স্ব উপজেলা ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে নিজ উপজেলায় কর্মরত থাকেন। সেক্ষেত্রে হাওড়/দ্বীপ/চর অঞ্চলে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকগণকে ঝুঁকি নিয়ে কাঁচা রাস্তার পথ হেঁটে, দুর্গম হাওড়, দ্বীপ ও নদীপথ পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে পাঠদান কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। বিশেষ করে নারী শিক্ষকদেরকে অনেক ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট করে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের অধিকাংশই নারী হওয়ায় সুগম এলাকায় পদ শূন্য হলে তাঁরা অন্যত্র বদলি সূত্রে চলে যান। সেকারণে বেশিরভাগ সময় এ সকল অঞ্চলের বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষকের পদশূন্য থাকে। ফলে হাওর/দ্বীপ/চর ও দুর্গম এলাকায় বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়। উল্লেখ্য যে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক হাওর/দ্বীপ/চর অঞ্চল হিসেবে ঘোষিত ১৬টি উপজেলায় ১৩০৭টি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে।

০৩। প্রসঙ্গত গত ০২/০৩/২০২৫ তারিখে মাননীয় অর্থ উপদেষ্টার সংগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয়ের এবং গত ১২.০৫.২০২৫ তারিখে অর্থ বিভাগের সচিব মহোদয়ের সংগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয়ের এ বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। উভয় সভায় আলোচনাকালে আর্থিক সংশ্লেষসহ প্রস্তাব প্রেরণের জন্য অর্থ বিভাগ কর্তৃক অনুরোধ জানানো হয়।

৫। আরও উল্লেখ্য যে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১৮.০২.২০১৯ তারিখের ০৪,০০,০০০০,৫১২.৩৫.০১১.১৭.৭৬ নং এসআরও এ হাওড় চর/দ্বীপ উপজেলা হিসেবে ঘোষিত ১৬টি উপজেলার অস্থানীয় শিক্ষকগণকে রাজস্ব বাজেটের আওতায় বরাদ্দকৃত অর্থ হতে নিয়মিতভাবে হাওড়/দ্বীপ/চরভাতা প্রদান করা হচ্ছে। ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে এই খাতে ৩০,৩৪,২৬,০০০/(ত্রিশ কোটি চৌত্রিশ লক্ষ ছাব্বিশ হাজার) টাকা বরাদ্দ রাখা আছে। এই ১৬ উপজেলার সকল (স্থানীয়/অস্থানীয়) শিক্ষক/কর্মচারীকে হাওড়/দ্বীপ। চর অঞ্চল ভাতা প্রদান করতে হলে অতিরিক্ত ৭,৫১,৫১,৬০০/-(সাত কোটি একান্ত লক্ষ ঊনষাট হাজার ছয়শত) টাকা প্রয়োজন হবে (কপি সংযুক্ত)।

০৬। এমতাবস্থায়, হাওড়/দ্বীপ/চর অঞ্চলে অবস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থানীয় শিক্ষক ও কর্মচারীগনকে হাওড়/দ্বীপ/চর ভাতা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগের প্রবিধি-৩ শাখা হতে ২৬.০১.২০২২ তারিখে ০৭,০০,০০০০,১৭৩,৪১,০২৭.১৫-১১ সংখ্যক স্মারক পত্রের ২ নং ক্রমিকে বর্ণিত নির্দেশনা বাতিলপূর্বক অতিরিক্ত ৭,৫১,৫৯,৬০০/- টাকা বরাদ্দ প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে সবিনয় অনুরোধ করা হলো।

সংযুক্তি: বর্ণনামতে।

স্বাক্ষরিত

রেবেকা সুলতানা যুগ্মসচিব

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়





No comments

Your opinion here...

Theme images by fpm. Powered by Blogger.