শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি নীতিমালা ২০১৯
শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি নীতিমালা ২০১৯
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
বিদ্যালয়-১ অধিশাখা
www.mopme.gov.bd
স্মারক নং ৩৮.০০.০০০০.০০৭.৯৯.00৫.১৯/৫৩
তারিখঃ ২১ মাঘ ১৪২৬ ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
পরিপত্র
বিষয়ঃ শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি নীতিমালা ২০১৯
১. শিরোনামঃ
এই নীতিমালা “শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি নীতিমালা ২০১৯” নামে অভিহিত হবে।
২. পরিধি ও নির্বাচন পদ্ধতিঃ
২.১ শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত সকল শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীগণ শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তির জন্য বিবেচিত হবে।
২.২ দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তির জন্য নির্বাচিত করা হবে।
৩. পরীক্ষার বিষয়, নম্বর ও সময়ঃ
৩.১ দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিম্নের ০৩ (তিন)টি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবেঃ
(১) বাংলা;
(২) ইংরেজী;
(৩) গণিত
৩.২ বাংলা, ইংরেজী ও গণিত এই ০৩ (তিন) টি বিষয়ে সর্বমোট ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা ২ (দুই) ঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে।
৩.৩ প্রাথমিক শিক্ষা কারিকুলামে (Curriculum) অন্তর্ভুক্ত দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক ওপাঠ্যসূচি অনুসারে শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
৩.৪ পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবেনা।
৩.৫ প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য মোট ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে পাশ নম্বর হবে ৪০।
৩.৬ কোন ক্রমেই পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করা যাবেনা।
৪. পরীক্ষা কেন্দ্রঃ
ঢাকা মহানগরীর শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের জন্য প্রতিটি শিক্ষা থানায় একটি, জেলা সদরের বিদ্যালয়সমূহের জন্য জেলা সদরে একটি এবং থানা/উপজেলা পর্যায়ের বিদ্যালয়সমূহের ক্ষেত্রে থানা/উপজেলা পর্যায়ে একটি বৃত্তি পরীক্ষার কেন্দ্র নির্বাচন করা হবে।
৫. বৃত্তি তহবিল
৫.১ শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি পরিচালনার জন্য সরকারপ্রদত্ত এনডোমেন্ট ফান্ড বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রাপ্ত লভ্যাংশ হতে দশ শতাংশ মূল তহবিলে স্থানান্তরের পর অবশিষ্ট অর্থ বৃত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
৫.২ শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিল গঠণসংক্রান্ত বিধিমালা অনুযায়ী কোন উৎস হতে বৃত্তি খাতে প্রাপ্ত অর্থ।
৬. শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটিঃ
৬.১. শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটি নিম্নরূপে গঠিত হবেঃ- (১) অতিরিক্ত সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা
(২) যুগ্ম-সচিব (বিদ্যালয়), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা --সভাপতি
(৩) পরিচালক, (পলিসি ও অপারেশন), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মিরপুর-২ ঢাকা--সদস্য
(৪) উপ-পরিচালক, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমী (নেপ), ময়মনসিংহ--সদস্য
(৫) উপ-সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা--সদস্য
(৬) উপ-সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা--সদস্য
(৭) উপ-সচিব (বিদ্যালয়-১), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা সদস্য
(৮) উপ-সচিব (বিদ্যালয় -২), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা
সদস্য সচিব
(৯) পরিচালক, শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট, মিরপুর-২, ঢাকা--সদস্য সচিব
(১০) সহকারি পরিচালক, শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট, মিরপুর-২, ঢাকা--সদস্য
৬.২. স্টিয়ারিং কমিটির কার্যপরিধিঃ
(১) প্রতিবছর বৃত্তির সংখ্যা নির্ধারণ ও উক্ত সংখ্যা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ;
(২) পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ;
(৩) পরীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত বাজেট অনুমোদন;
(৪) বৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীর মেধা/ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ বৃত্তির মাসিক প্রদেয় অর্থের পরিমান নির্ধারণ;
(৫) বৃত্তি সংক্রান্ত কোটা নির্ধারণ;
(৬) শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকান্ড সম্পর্কে দিক নির্দেশনা প্রদান।
৭. শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি পরীক্ষার ফিসঃ
ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে কোন পরীক্ষার ফিস নেয়া হবেনা।
৮. শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তির প্রকারঃ
৮.১ শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নিম্নলিখিত দুই ধরণের বৃত্তি প্রদানের জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করা হবেঃ
(১) মেধা/ট্যালেন্টপুল ও
(২) সাধারণ বৃত্তি।
৯. কোটা নির্ধারণঃ
৯.১ সব শ্রেণিতে বৃত্তিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী হতে ৫০ শতাংশ ছাত্রদের এবং ৫০ শতাংশ ছাত্রীদের জন্য বৃত্তি নির্ধারিত থাকবে। তবে নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে ছাত্রের বৃত্তি ছাত্রী দ্বারা এবং ছাত্রীর বৃত্তি ছাত্র দ্বারা পুরণ করা হবে।
৯.২ বৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা ও থানা/উপজেলার শ্রেণিভিত্তিক ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যার ভিত্তিতে জেলা ও থানা/উপজেলার বৃত্তির কোটা নির্ধারণ করা হবে।
১০. বৃত্তি প্রদানের নিয়মাবলিঃ
১০.১ মেধা/ট্যালেন্টপুল বৃত্তিঃ
দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শ্রেণির জন্য মোট বৃত্তির ২০% হিসেবে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ছাত্র ও ছাত্রীদের মেধা/ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি প্রদানের জন্য নির্বাচন করা হবে। মোট মেধা/ট্যালেন্টপুল বৃত্তির ৩৫% দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য, ৩০% তৃতীয় শ্রেণির জন্য, ২০% চতুর্থ শ্রেণির জন্য এবং ১৫% পঞ্চম শ্রেণির জন্য নির্ধারিত থাকবে।
১০.২ সাধারণ বৃত্তিঃ মোট বৃত্তির সংখ্যা হতে মেধা বৃত্তির সংখ্যা বাদ দেয়ার পর অবশিষ্ট বৃত্তি সাধারণ বৃত্তি হিসেবে গণ্য হবে। সাধারণ বৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে মোট সাধারণ বৃত্তির ৩৫% দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য, ৩০% তৃতীয় শ্রেণির জন্য, ২০% চতুর্থ শ্রেণির জন্য এবং ১৫% পঞ্চম শ্রেণির জন্য নির্ধারিত থাকবে।
১০.৩ দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীগণ পরবর্তী বার্ষিক পরীক্ষাসমূহে কমপক্ষে ৪০% নম্বর প্রাপ্ত হলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তি অব্যাহত রাখা হবে। পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীগণ ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির প্রত্যয়নপত্র প্রদান সাপেক্ষে ০১ (এক) বছরের জন্য বৃত্তির অর্থ প্রাপ্য হবেন।
১০.৪ দ্বিতীয় হতে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক শ্রেণীতে মোট শিক্ষার্থীর ২০% বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
১১. প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও প্রেরণঃ
প্রশ্নপত্র জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমী (নেপ) এর মাধ্যমে প্রণয়নপূর্বক ঢাকা মহানগরীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানা শিক্ষা অফিসারগণের নিকট; জেলা ও থানা/উপজেলার ক্ষেত্রে যথাক্রমে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণের নিকট নিরাপত্তা কোডের মাধ্যমে ই-মেইলে যথাসময়ে প্রশ্নপত্র প্রেরণ করা হবে। প্রশ্নপত্র প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ প্রশ্নপত্রের প্রয়োজনীয় সংখ্যক কপিকরে সময়সূচী অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করবেন।
১২. বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণঃ
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে বৃত্তি পরীক্ষা যথাক্রমে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও থানা / উপজেলা শিক্ষা অফিসারের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। ঢাকা মহানগরীর শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানা/উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ পরীক্ষা গ্রহণপূর্বক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের তত্বাবধানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণের মাধ্যমে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে নম্বরপত্র ট্রাস্ট দপ্তরে প্রেরণ করবেন। জেলা পর্যায়ের বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের তত্বাবধানে এবং থানা/উপজেলা পর্যায়ের বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানা/উপজেলা শিক্ষা অফিসারের তত্বাবধানে সুষ্ঠুভাবে বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণপূর্বক উত্তরপত্র মূল্যায়নের পর নম্বরপত্র ট্রাস্ট দপ্তরে প্রেরণ করবেন।
১৩. সনদপত্রঃ
শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্র-ছাত্রীকে সনদপত্র প্রদান করা হবে।
১৪. ফলাফল সংরক্ষণঃ
শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল ট্রাস্ট দপ্তরে স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকবে।
১৫. “গোপনীয়তাঃ
১৫.১ পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কাজে, সকল স্তরে গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মুদ্রণ, বিতরণ, উত্তরপত্র প্রস্তুত, কোডিং-ডিকোডিং, উত্তরপত্র মূল্যায়ণ, ফলাফল প্রস্তুত ও সংরক্ষণ ইত্যাদি কাজে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।
১৬. কার্যকরিতা, রহিতকরণ ও হেফাজতঃ
১৬.১ এ নীতিমালা জারির তারিখ থেকে তা সারা দেশের সকল শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষার জন্য কার্যকর হবে এবং এ নীতিমালা জারির পূর্বের এতদসংক্রান্ত সকল আদেশ/নির্দেশ/সিদ্ধান্ত রহিত বলে গণ্য হবে।
১৬.২ উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও আদেশ/নির্দেশ/সিদ্ধান্ত ইতোপূর্বে প্রদত্ত ও চলমান বৃত্তিসমূহ এই নীতিমালার আওতায় প্রদান করা হয়েছে বলে গণ্য হবে।
স্বাক্ষরিত/-
(রতন চন্দ্র পন্ডিত) অতিরিক্ত সচিব
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পিডিএফ ডাউনলোড
No comments
Your opinion here...