বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনে বড় পরিবর্তন: নতুন বিধিমালা জারি করল সরকার
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনে বড় পরিবর্তন: নতুন বিধিমালা জারি করল সরকার
স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনে নতুন বিধিমালা জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর ২০২৫) প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ, নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করে। ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে জারি করা এ প্রজ্ঞাপন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীন স্বাক্ষর করেন। বিধিমালা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে।
শূন্যপদের চাহিদা সংগ্রহে নতুন নির্দেশনা
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী এনটিআরসিএ সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্যপদের তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ করবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে পূর্ববর্তী বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদ্যমান শূন্যপদ এবং পরবর্তী তিন বছরের সম্ভাব্য শূন্যপদের তালিকা অনলাইনে পাঠাতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই অনুমোদিত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই তালিকা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পরীক্ষা গ্রহণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
শূন্যপদের চাহিদা নিরূপণের পর এনটিআরসিএ নির্ধারিত স্থানে পরীক্ষা আয়োজন করবে। পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থানসহ বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি বাংলা ও ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় এবং এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। আবেদন, প্রবেশপত্র বিতরণ, পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশসহ সব ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থা ব্যবহার করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
বয়সসীমা ও যোগ্যতার কঠোর বিধান
বিজ্ঞপ্তির তারিখে সরকারের নির্ধারিত বয়সসীমার মধ্যেই আবেদন করতে হবে। যোগ্যতা সংক্রান্ত বিধানে বলা হয়েছে—
প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট পদের জন্য নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
-
তিনি অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা বা ডমিসাইলধারী হতে হবে।
-
বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করলে অথবা বিয়ের প্রতিশ্রুতি থাকলেও তিনি অযোগ্য হবেন।
-
নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দণ্ডিত হলে বা চাকরি থেকে দুই বছরের কম সময় আগে বরখাস্ত হলে আবেদন করা যাবে না।
পরীক্ষা পদ্ধতিতে মৌখিক পরীক্ষা যুক্ত হলো
নতুন বিধিমালায় নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
লিখিত বা বাছাই পরীক্ষায় পাশ নম্বর: ৪০%
-
শূন্যপদের বিপরীতে ১:২ অনুপাতে ফল প্রকাশ
-
মৌখিক পরীক্ষার পূর্ণমান: ২০, পাশ নম্বর: ৪০%
মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুসারে ১:১ অনুপাতে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে লিপিকরের (scribe) সহায়তায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রাখারও বিধান করা হয়েছে।
উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ নেই
বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে—
লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষার নম্বরপত্র সম্পূর্ণ গোপনীয়।
-
কোনো পুনঃনিরীক্ষণ বা পুনঃপরীক্ষণের আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
-
ফল প্রকাশের তারিখ থেকে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত উত্তরপত্র সংরক্ষণ করা হবে।
প্রত্যয়নপত্র ও নিবন্ধন ডিজিটাল পদ্ধতিতে
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ডাটাবেজে নিবন্ধন করা হবে এবং তফসিলে বর্ণিত ফরম অনুযায়ী প্রত্যয়নপত্র বা ই-সনদ প্রদান করা হবে। প্রয়োজনে নির্ধারিত ফি দিয়ে ডুপ্লিকেট বা সংশোধিত সনদ নেওয়ার সুযোগ থাকবে।
মিথ্যা তথ্য দিলে আজীবন নিষেধাজ্ঞা
আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য বা জাল সনদ ব্যবহার করলে—
পরীক্ষার্থীকে পরবর্তী কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।
-
প্রত্যয়নপত্র ইস্যুর পর এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে নিবন্ধন বাতিল হবে।
-
এ অবস্থায় কেউ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকলে সেই নিয়োগও বাতিল হবে এবং আর্থিক সুবিধা ফেরত দিতে হবে।
২০০৬ সালের বিধিমালা রহিত
নতুন বিধিমালা কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা ২০০৬ রহিত করা হয়েছে। তবে পূর্বের বিধিমালার অধীনে গৃহীত কার্যক্রম বা প্রক্রিয়াগুলো বিদ্যমান বিধিমালার আওতায় সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ গেজেট
অতিরিক্ত সংখ্যা
কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৫
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
শিক্ষা মন্ত্রণালয়
প্রজ্ঞাপন
তারিখ: ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ/০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
এস. আর. ও. নম্বর-৪৬০-আইন/২০২৫।-বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ১ নং আইন) এর ধারা ২১ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, সরকার নিম্নরূপ বিধিমালা প্রণয়ন করিল, যথা:-
১। শিরোনাম ও প্রবর্তন। (১) এই বিধিমালা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ, নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০২৫ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। সংজ্ঞা। (১) বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই বিধিমালায়-
(ক) "আইন” অর্থ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ১নং আইন);
(খ) "কর্তৃপক্ষ” অর্থ আইনের ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ;
(গ) “তফসিল” অর্থ এই বিধিমালার তফসিল;
(ঘ) "নিবন্ধন” অর্থ আইনের ধারা ২ এর দফা (ঙ)-তে সংজ্ঞায়িত নিবন্ধন;
(ঙ) "পদ” অর্থ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের পদ;
(চ) "পরীক্ষা” অর্থ আইনের ধারা ৮ এর দফা (ঘ) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে গৃহীত পরীক্ষা;
(ছ) "প্রত্যয়ন” অর্থ আইনের ধারা ২ এর দফা (ছ)-তে সংজ্ঞায়িত প্রত্যয়ন;
(জ) “প্রার্থী” অর্থ প্রত্যয়নপত্র লাভের উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক যোগ্যতাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তি; এবং
(ঝ) "শূন্যপদ” অর্থ শিক্ষক চাহিদা নিরূপণের উদ্দেশ্যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য যোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রণয়ন, নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংগৃহীত শূন্যপদ।
(২) এই বিধিমালায় ব্যবহৃত যে সকল শব্দ বা অভিব্যক্তির সংজ্ঞা প্রদান করা হয় নাই, সেই সকল শব্দ বা অভিব্যক্তি আইনে যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে প্রযোজ্য হইবে।
৩। শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের জন্য শূন্যপদের চাহিদা নিরূপণ। (১) কর্তৃপক্ষ যোগ্য
শিক্ষকদের তালিকা প্রণয়ন, নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের জন্য শূন্যপদের চাহিদা সংগ্রহ করিবে।
(২) উপ-বিধি (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ অনুমোদিত জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হইতে শিক্ষকের শূন্যপদের চাহিদা গ্রহণ করিবে।
(৩) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পূর্ববর্তী বৎসরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শূন্যপদের চাহিদা এবং তৎপরবর্তী ৩ (তিন) বৎসরের বৎসরভিত্তিক শূন্যপদের চাহিদা অনলাইনে প্রেরণ করিবে।
(৪) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হইতে শূন্যপদের চাহিদা চলমান বৎসরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্ষেত্রমত ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডিকে অবহিতক্রমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রেরণ করিতে হইবে এবং অধিদপ্তরসমূহ প্রাপ্ত শূন্যপদের তালিকা যাচাই-বাছাই করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-তে প্রেরণ করিবে।
(৫) স্ব স্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হইতে শূন্যপদের তালিকা সংগ্রহ ও বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-তে প্রেরণের জন্য অধিদপ্তরসমূহ নিজস্ব তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করিতে পারিবে।
৪। শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের জন্য পরীক্ষা গ্রহণ। (১) বিধি ৩ এর অধীন শূন্যপদের চাহিদা
নিরূপণের পর পূর্ববর্তী বৎসরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শূন্যপদের চাহিদা অনুসারে যোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রণয়ন, নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের জন্য কর্তৃপক্ষ তকর্তৃক নির্ধারিত স্থানে প্রার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ করিবে।
(২) কর্তৃপক্ষ তকর্তৃক নির্ধারিত সময়ের পূর্বে পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান সম্পর্কিত বিস্তারিত সময়সূচি ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য তথ্যসংবলিত বিজ্ঞপ্তি বহুল প্রচারিত অন্যূন একটি বাংলা জাতীয় দৈনিক ও একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ এবং কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রচার করিবে।
(৩) উপ-বিধি (২) অনুসারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর উহাতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত ফি প্রদানপূর্বক প্রার্থীকে আবেদন করিতে হইবে।
(৪) উপ-বিধি (২) এ উল্লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত শর্তাবলি প্রতিপালন না করিলে অথবা নির্ধারিত ফি প্রদান না করিলে সংশ্লিষ্ট আবেদনপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।
(৫) পরীক্ষার জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ ও বাছাই, প্রবেশপত্র তৈরী ও বিতরণ, পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল প্রস্তুত ও প্রকাশ, পদভিত্তিক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন, ইত্যাদি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করিবার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় যুগোপযোগী তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক পদ্ধতি প্রবর্তন করিতে পারিবে।
৫। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বয়স।-বিধি ৪ এ বর্ণিত পরীক্ষায় আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে এতদুদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বয়সসীমার মধ্যে হইতে হইবে।
৬। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা ও অন্যান্য শর্ত। কোনো প্রার্থী এই বিধিমালার অধীন নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের জন্য অনুষ্ঠেয় পরীক্ষায় যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবেন না, যদি তিনি-
( ক) যে পদে নিয়োগের জন্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হইতে ইচ্ছুক, সেই পদের জন্য সর্বশেষ অনুমোদিত সংশ্লিষ্ট জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী তাহার প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকে;
( খ) বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা না হইয়া থাকেন অথবা বাংলাদেশের ডমিসাইল না হইয়া থাকেন;
( গ) এইরূপ কোনো ব্যক্তিকে বিবাহ করেন অথবা বিবাহ করিবার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হইয়া থাকেন, যিনি বাংলাদেশের নাগরিক নহেন;
(ঘ) কোনো সরকারি বা বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাকুরি হইতে বরখাস্ত হইয়া থাকেন এবং উক্ত বরখাস্তের তারিখ হইতে ২ (দুই) বৎসর অতিক্রান্ত না হইয়া থাকে;
( ঙ) কোনো ফৌজদারি আদালত কর্তৃক নৈতিক স্খলনজনিত কারণে যে কোনো মেয়াদে কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইয়া থাকেন;
(চ) উক্ত পদের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আবেদনপত্র আহ্বানের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ফিসসহ নির্ধারিত ফরমে আবেদন না করেন বা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আবেদনপত্র দাখিল না করেন; এবং
(ছ) কোনো সরকারি বা বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাকুরিতে নিয়োজিত থাকাকালে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনপত্র দাখিল না করেন।
৭। পরীক্ষা পদ্ধতি(১) বিধি ৪ এ উল্লিখিত পরীক্ষা নির্বাচনি বা বাছাই পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হইবে।
(২) নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষার বিষয়, ব্যাপ্তি ও নম্বর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
(৩) নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষায় পাশ নম্বর হইবে মোট নম্বরের অন্যূন ৪০% (চল্লিশ শতাংশ) নম্বর।
(৪) কর্তৃপক্ষ বিধি ৪ এর উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত শূন্যপদের ১:২ অনুপাতে বিষয় ও পদভিত্তিক নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করিবে।
(৫) উপ-বিধি (৪) এর অধীন ফলাফল প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষ উহাতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করিবে, যাহাতে মোট ২০ (বিশ) নম্বর থাকিবে এবং পাশ নম্বর হইবে মোট নম্বরের অন্যূন ৪০% (চল্লিশ শতাংশ) নম্বর।
(৬) বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (Persons with Special needs) কোনো প্রার্থী নিজে লিখিত অপারগ হইলে তাহার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ অথবা তস্কর্তৃক মনোনীত কোনো প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট নীতিমালা বা এতদসংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুসরণপূর্বক তাহাকে লিপিকর (Scribe) এর সহযোগিতায় পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
৮। উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও ফলাফল, ইত্যাদি। (১) কর্তৃপক্ষ নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষা ও মৌখিক
পরীক্ষা উভয় ক্ষেত্রে পরীক্ষা সমাপ্ত হইবার পর যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করিবে।
(২) মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য হইতে নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রমানুসারে বিষয় ও পদভিত্তিক বিধি ৪ এর উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত শূন্যপদের চাহিদার বিপরীতে ১.০০:১.০০ অনুপাতে একটি তালিকা প্রণয়ন করা হইবে।
(৩) সকল পরীক্ষায় কৃতকার্যতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৪) নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষার উত্তরপত্র ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বরপত্র গোপনীয় দলিল বলিয়া বিবেচিত হইবে।
(৫) নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষার উত্তরপত্র ও নম্বরপত্র এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বরপত্র পুনঃনিরীক্ষণ বা পুনঃপরীক্ষণের কোনো আবেদন গ্রহণ করা হইবে না এবং এতদসংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রার্থী বা তাহার প্রতিনিধিকে প্রদর্শন বা প্রদান করা হইবে না।
(৬) নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষার উত্তরপত্র ও নম্বরপত্র এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বরপত্র ফলাফল প্রকাশের তারিখ হইতে প্রয়োজন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হইবে।
৯। কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রার্থী নিবন্ধন ও প্রত্যয়নপত্র প্রদান। (১) কর্তৃপক্ষ নির্বাচনি বা বাছাই পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে বিধি ৮(২) মোতাবেক প্রণীত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত প্রার্থীগণকে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক পদ্ধতিতে ডাটাবেজে নিবন্ধন করিবে এবং তফসিলে বর্ণিত ফরম অনুযায়ী প্রত্যয়নপত্র বা সনদ অথবা ই-প্রত্যয়নপত্র বা ই-সনদ প্রদান করিবে।
(২) কোনো প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, নির্ধারিত ফি পরিশোধসাপেক্ষে প্রার্থীর অনুকূলে ডুপ্লিকেট বা সংশোধিত প্রত্যয়নপত্র বা সনদ সরবরাহ করিতে পারিবে।
১০। মিথ্যা তথ্য প্রদান। (১) যদি কোনো প্রার্থী তাহার আবেদপত্রে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন কিংবা কোনো তথ্য গোপন করেন কিংবা তাহার শিক্ষাগত যোগ্যতা বা জাতীয়তা সনদ বা বয়স সম্পর্কিত সনদ বা অন্যান্য কাগজপত্র ও সনদের জাল কপি দাখিল করেন অথবা জাল করেন, তাহা হইলে তাহার পরীক্ষা বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং তিনি কর্তৃপক্ষের পরবর্তী কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না।
(২) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধন ও প্রত্যয়নপত্র প্রদানের পর, যে কোনো সময়ে, কোনো প্রার্থী সম্পর্কে উপ-বিধি-(১) এর অধীন কোনো তথ্য বা অভিযোগ পাওয়া গেলে, যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে, তাহার নিবন্ধন ও প্রত্যয়নপত্র বাতিল করা হইবে এবং তিনি কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাইয়া থাকিলে উক্ত নিয়োগ বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) উপ-বিধি (২) এর অধীন কোনো নিয়োগ বাতিল হইলে নিয়োগ লাভের কারণে প্রাপ্ত আর্থিক সুবিধাদি ফেরতযোগ্য হইবে।
১১। রহিতকরণ ও হেফাজত। (১) বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০০৬, অতঃপর উক্ত বিধিমালা বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপ-বিধি (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত বিধিমালার অধীন-
(ক) কৃত কোনো কার্য বা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা এই বিধিমালার অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
(খ) গৃহীত কোনো কার্যধারা বা সূচিত কোনো কার্যক্রম অনিষ্পন্ন থাকিলে, উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে, যেন উহা এই বিধিমালার অধীন গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে
রেহানা পারভীন
সচিব
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।









No comments
Your opinion here...