ad

শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাতটি অপরিহার্য পদক্ষেপ

Views

 


শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাতটি অপরিহার্য পদক্ষেপ

শিশুর বিকাশে পরিবার-বিদ্যালয়ের যৌথ দায়িত্ব: অভিভাবকদের জন্য করণীয় নির্দেশনা 

স্টাফ রিপোর্টার:
শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশ শুধু বিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে না—এতে পরিবার, বিশেষ করে বাবা-মা ও অভিভাবকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছোটবেলা থেকেই শিশুরা দ্রুত শেখে, তাই এই সময় তাদের শারীরিক যত্ন, মানসিক বিকাশ, অভ্যাস গঠন ও সঠিক দিকনির্দেশনা নিশ্চিত করা জরুরি। এ লক্ষ্যেই প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশে অভিভাবকদের জন্য নতুন করণীয় নির্দেশনা। 

 শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি, ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতা, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ, সামাজিক ও আবেগীয় উন্নয়ন, ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রতি শিশুর ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলা এবং মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার বা আসক্তি প্রতিরোধে অভিভাবকদের করণীয় নির্দেশনাও রয়েছে।

 শিশুর দৈনন্দিন জীবনযাপন, অভ্যাস, আচরণ, শিক্ষা ও সামাজিক অংশগ্রহণকে অভিভাবকদেরই ইতিবাচকভাবে পরিচালিত করতে হবে। এতে শিশুর আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা, মূল্যবোধ ও সামাজিক সম্প্রীতি বিকশিত হবে, যা ভবিষ্যতে শিক্ষিত ও আলোকিত প্রজন্ম গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশে করণীয়

নির্দেশিকা অনুসারে, শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি যেমন—লম্বা হওয়া বা ওজন বৃদ্ধি পাওয়া—বয়স অনুযায়ী সঠিক আছে কি না তা অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি শারীরিক বিকাশের সঙ্গে মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি।

শিশুর পেশি ও শারীরিক সঞ্চালন দক্ষতা বাড়াতে যেসব কাজ করতে হবে—

  1. শিশু যেন দৌড়ঝাঁপ, লাফানো, ছুটোছুটি করতে পারে সে সুযোগ করে দিতে হবে।

  2. বয়স উপযোগী ছোট ছোট গৃহস্থালি কাজ শেখাতে হবে।

  3. ব্লক দিয়ে খেলার সুযোগ দিতে হবে, যা হাত-চোখের সমন্বয় বাড়ায়।

  4. পেন্সিল দিয়ে আঁকিবুঁকি বা ছবি আঁকতে উৎসাহ দিতে হবে।

শিশুর দৈনন্দিন কাজগুলোতে স্বনির্ভরতা গড়ে তোলার নির্দেশনা

  1. নিজে নিজে পোশাক পরতে শেখানো।

  2. নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তোলা।

  3. পেন্সিল-কলম সঠিকভাবে ধরার অভ্যাস করানো।

  4. কাজ শেষে নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার অভ্যাস করানো।

পুষ্টি গ্রহণ ও সুষম খাদ্যের গুরুত্ব

শিশুর সামগ্রিক বিকাশে পুষ্টিকর খাবারের ভূমিকা অপরিহার্য। নির্দেশনায় বলা হয়—
মাছ, মাংস, ডাল, শাকসবজি, ডিম, ফলমূলসহ সুষম খাদ্য নিশ্চিত করলে শিশুর শরীর যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি মনোযোগ, বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।

সুস্থ-সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠনে অভিভাবকদের অগ্রণী ভূমিকা

নির্দেশিকায় জোর দিয়ে বলা হয়, শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া শিশুর পূর্ণাঙ্গ বিকাশ সম্ভব নয়। তাই শিশুর শেখা, খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, খেলাধুলা, সামাজিক আচরণ, নিরাপত্তা—সবকিছুতেই পরিবারকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

শিশুদের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে তারা হবে আত্মবিশ্বাসী, সৃজনশীল, পরিশ্রমী এবং মূল্যবোধসম্পন্ন—যা দেশের আগামী প্রজন্মকে আরও আলোকিত ও মানবিক করে তুলবে।

শিশুর বেড়ে ওঠা শুধু বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নয়, বাবা-মা ও পরিবারের প্রতিটি সদস্যের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। ছোটবেলায় শিশুরা দ্রুত শেখে, তাই তাদের শারীরিক যত্ন, মানসিক বিকাশ, ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা এবং সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া খুব জরুরি। এই নির্দেশিকায় বাবা-মা/অভিভাবকদের জন্য এমন কিছু সহজ করণীয় রয়েছে, যা অনুসরণ করলে শিশুরা সুস্থভাবে বেড়ে উঠবে, পড়াশোনায় আগ্রহী হবে এবং ভালো মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।

 প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের শারীরিক বৃদ্ধি, ভাষা ও যোগাযোগ, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ, সামাজিক ও আবেগীয় বিকাশ, নৈতিকতা ও ধর্মচর্চা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, নিরাপত্তা এবং শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্ক বিষয়ে করণীয় কার্যক্রম সুনির্দিষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের প্রতি শিশুর ইতিবাচক মনোভাব তৈরি এবং মোবাইল আসক্তি প্রতিরোধে কার্যকর দিকনির্দেশনাও এখানে সংযোজিত হয়েছে।

অভিভাবকগণকে তাঁদের সন্তানের দৈনন্দিন জীবনযাপন, অভ্যাস, আচরণ, শিক্ষা ও সামাজিক অংশগ্রহণকে ইতিবাচকভাবে পরিচালিত করতে সহায়তা দিবে। এর ফলে শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা, মূল্যবোধ ও সামাজিক সম্প্রীতি বিকশিত হবে, যা একটি সুস্থ, শিক্ষিত ও আলোকিত প্রজন্ম গঠনে সহায়ক হবে।

১. শিশুর বিকাশ ও করণীয়

১.১ শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশে করণীয়

শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি হলো বয়স অনুযায়ী শারীরিক বৃদ্ধি যথাযথ হচ্ছে কিনা তা খেয়াল রাখা। যেমন- লম্বা হওয়া, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি।

শারীরিক বৃদ্ধির সাথে সাথে শিশুর বিকাশও ঘটে। শিশুর বিকাশ ঠিকমতো হওয়ার জন্য আপনি যা করতে পারেন,

👉 শিশুর শারীরিক বা পেশি সঞ্চালনমূলক বিকাশে সহায়তা করার জন্য শিশুকে-

*** দৌড়ঝাঁপ, লাফানো ও ছুটাছুটি করার সুযোগ করে দেওয়া।

*** বাড়ির ছোট ছোট কাজ করতে দেওয়া।

*** ব্লক দিয়ে খেলার সুযোগ করে দেওয়া।

*** পেন্সিল দিয়ে ছবি আঁকতে উৎসাহিত করা।

👉 শিশুকে তার প্রতিদিনের কাজগুলো করতে উৎসাহিত করুন।

*** নিজে নিজে পোশাক পরা।

*** দাঁত ব্রাশ করা।

*** সঠিকভাবে পেন্সিল-কলম ধরতে পারা।

*** কাজের বা খেলার পর জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা।

👉 শিশুর শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক তথা সামগ্রিক বিকাশের জন্য পুষ্টিকর ও সুষম খাবার (মাছ, গোস্ত, ডাল, শাক-সবজি ইত্যাদি) নিশ্চিত করুন।






No comments

Your opinion here...

Theme images by fpm. Powered by Blogger.