সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন থেকে বাধ্যতামূলক আয়কর কর্তনের নির্দেশনা জারি
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন থেকে বাধ্যতামূলক আয়কর কর্তনের নির্দেশনা জারি
উপশিরোনাম:
করযোগ্য আয়ের সীমা অতিক্রম করলেও অনেক কর্মকর্তা কর দিচ্ছেন না — কঠোর নির্দেশ দিল অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ
সংবাদ প্রতিবেদন:
ঢাকা, ৭ অক্টোবর ২০২৫ (২২ আশ্বিন ১৪৩২):
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন আয় থেকে বাধ্যতামূলকভাবে উৎসে আয়কর কর্তনের নির্দেশ দিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (IRD) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরিত আধা-সরকারি পত্র (নং-০৮.০০.০০০০.০১১.৯৯.০০১.২৫-২২৭, তারিখ: ০৭ অক্টোবর ২০২৫) এ এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৮৬(৩) অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন আয় হতে উৎসে কর কর্তন বাধ্যতামূলক। আইন অনুযায়ী, যদি কোনো কর্মকর্তা আয়নকারী ও ব্যয়নকারী কর্মকর্তা (ডিডিও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বা অন্য কোনো সরকারি অধীনস্তের জন্য বিল প্রস্তুত ও স্বাক্ষর করেন, তাহলে করমুক্ত সীমা অতিক্রম করলে তাঁকে উৎসে কর কর্তন করতে হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, iBAS++ প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষিত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, অনেক সরকারি দপ্তরে করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন হতে কোনো আয়কর কর্তন করা হচ্ছে না।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ জানায়, চলতি আয় বছরে —
পুরুষ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাসিক মূল বেতন যদি ২৬,৭৮৫ টাকা বা তার বেশি হয়, এবং
-
নারী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাসিক মূল বেতন যদি ৩০,৩৫৭ টাকা বা তার বেশি হয়,
তাহলে তাঁদের আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করছে। সেক্ষেত্রে তাঁদের বেতন হতে প্রতি মাসে উৎসে কর কর্তন করা বাধ্যতামূলক।
চিঠিতে সচিব অনুরোধ জানিয়েছেন, প্রতিটি দপ্তরের চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার (CAFO) যেন বেতন-ভাতাদি পরিশোধের আগে করযোগ্য আয়ের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। যদি কোনো কর্মকর্তা অন্য উৎস থেকে অগ্রিম কর পরিশোধ করে থাকেন, তবে তা সমন্বয় করে কর কর্তন করতে হবে।
পত্রে স্বাক্ষর করেন মোঃ আবদুর রহমান খান এফসিএমএ,
সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সংক্ষেপে:
এই নির্দেশনার মাধ্যমে সরকার বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে কর পরিশোধে শৃঙ্খলা আনতে চায়। যারা করযোগ্য সীমা অতিক্রম করেও এখনো উৎসে কর প্রদান করছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিতও মিলেছে বলে জানা গেছে।
সচিব
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ
ও
চেয়ারম্যান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ঢাকা
আধা সরকারী পত্র নং-০৮.০০.০০০০.০১১.৯৯.০০১.২৫-২২৭
তারিখ: ২২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ০৭ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শ্রদ্ধেয় মহোদয়,
আসসালামু আলাইকুম।
আপনি অবগত আছেন যে, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৮৬(৩) অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন আয় হতে উৎসে কর কর্তনের বিধান রয়েছে, যা নিম্নরূপ:
"যেইক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মকর্তা আয়নকারী ও ব্যয়নকারী কর্মকর্তা (ডিডিও) হিসাবে কার্য সম্পাদন করিয়াছেন বা সরকার বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে "চাকরি হইতে আয়" উত্তোলন করিবার জন্য নিজের বা অন্য কোনো সরকারি অধীনন্তের জন্য বিল প্রস্তুত বা স্বাক্ষর করিয়াছেন, সেইক্ষেত্রে তিনি উক্ত বিল তৈরি বা স্বাক্ষরের সময়, উক্ত আয়বর্ষের জন্য প্রদেয় বার্ষিক বেতন যদি ঝন্ত্রমুক্ত সীমা অতিক্রম করে, তাহা হইলে উক্ত আয়বর্ষের আনুমানিক মোট আয়ের জন্য প্রযোজ্য করের গড় হারে কর কর্তন করিবেন।"
০২। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতনভাতা ও আয়কর কর্তন সংক্রান্ত iBAS++ প্ল্যাটফর্মে রক্ষিত তথ্য পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, আপনার বিভাগ ও বিভাগের অধীন দপ্তরসমূহে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারি তাদের মাসিক বেতন বিল হতে কোন আয়কর কর্তন করেন না। উল্লেখ্য যে, চলতি আয় বছরে যে সকল পুরুষ কর্মকর্তা-কর্মচারির মাসিক মূল বেতনের পরিমাণ ২৬,৭৮৫ টাকা এবং যে সকল নারী কর্মকর্তা-কর্মচারির মাসিক মূল বেতন ৩০,৩৫৭ টাকা বা তার অধিক তাদের আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করছে বিধায় তাঁদের বেতন হতে প্রতি মাসে উৎসে কর কর্তন করা আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী বাধ্যতামূলক।
৩৩। এমতাবস্থায়, আপনার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ অ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসারকে করযোগ্য বেতন ভাতাদি পরিশোধের ক্ষেত্রে (অন্য কোন উৎস হতে অগ্রিম আয়কর পরিশোধ হয়ে থাকলে তা সমন্বয়পূর্বক) উৎসে আয়কর কর্তনের পর বেতন ভাতা পরিশোধের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করার জন্য মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ করছি।
স্বাক্ষরিত
মোঃ আবদুর রহমান খান এফসিএমএ



No comments
Your opinion here...