জানুয়ারি থেকে দেশে ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)’ কোর্স চালু
প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন যুগের সূচনা: ২০২৬ সাল থেকে চালু হচ্ছে ডিপিএড প্রি-সার্ভিস প্রশিক্ষণ
বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। শিক্ষকতার পেশায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথমবারের মতো চালু হতে যাচ্ছে ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)’ প্রি-সার্ভিস প্রশিক্ষণ। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকেই এ প্রশিক্ষণের পাইলটিং শুরু হবে।
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাকরিতে যোগদানের পর মৌলিক প্রশিক্ষণ (সিইনএড/ডিপিএড/বিটিপিটি) গ্রহণ করে থাকেন, যা ‘ইন-সার্ভিস প্রশিক্ষণ’ নামে পরিচিত। তবে শিক্ষকতার মানোন্নয়ন এবং শ্রেণিকক্ষে প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষক প্রবেশ ঠেকাতে সরকার এবার প্রি-সার্ভিস প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করার প্রক্রিয়ার দিকে এগোচ্ছে।
🔹 ২০২৬ সালে পাইলটিং: ১২টি পিটিআই-তে শুরু হচ্ছে ডিপিএড
২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে দেশের ১২টি প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই)-এ ১০ মাসের ডিপিএড কোর্স চালু হবে। এগুলো হলো—
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, যশোর, রাজশাহী, সিলেট, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, বরিশাল ও বগুড়া।
কোর্সটি অনাবাসিক ও বৈকালিক হওয়ায় কর্মজীবী বা শিক্ষার্থী উভয়ই এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
🔹 কে আবেদন করতে পারবেন?
-
যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারী
-
ন্যূনতম সিজিপিএ:
৪ স্কেলে: ২.২৫
-
৫ স্কেলে: ২.৮
-
শিক্ষা জীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা সমমানের ফলাফল গ্রহণযোগ্য নয়।
🔹 অগ্রাধিকার পাবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা
পাইলটিং শুরুর পর যারা এই ডিপিএড কোর্স সম্পন্ন করবেন, তারা শিক্ষক নিয়োগে অগ্রাধিকার পাবেন বলে জানা গেছে। ভবিষ্যতে ৬৭টি পিটিআইতে নিয়মিতভাবে প্রি-সার্ভিস ডিপিএড চালু হলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হলে এই প্রশিক্ষণ পূর্বেই নিজ খরচে সম্পন্ন করতে হবে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে। এমনকি ভবিষ্যতে এ প্রশিক্ষণ ছাড়া চাকরির আবেদন করাও সম্ভব নাও হতে পারে।
🔹 ভর্তি প্রক্রিয়া
নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে অনলাইনে আবেদন
-
ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্ত মেধা তালিকা
-
খুব শীঘ্রই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং নেপ-এর ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে।
🔹 শিক্ষণ পদ্ধতি আরও আধুনিক ও হাতে-কলমে
ডিপিএড কোর্সে তাত্ত্বিক পাঠদানের পাশাপাশি সিমুলেশন, স্কুলে অনুশীলন, রিফ্লেকটিভ প্র্যাকটিসসহ আধুনিক শিক্ষণ-শেখার পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষণার্থীরা বাস্তব দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পাবেন।
জানুয়ারি থেকে দেশে ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)’ কোর্স চালু
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও দক্ষ শিক্ষক তৈরি করার লক্ষ্যে সরকার নতুন একটি যুগোপযোগী কোর্স চালু করতে যাচ্ছে—‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড)’। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)-এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে দেশের ১২টি প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) এই কোর্সটি পাইলটিং আকারে চালু হবে।
নির্বাচিত ১২ পিটিআই হলো—ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, যশোর, রাজশাহী, সিলেট, জয়দেবপুর, দিনাজপুর, বরিশাল ও বগুড়া।
📌 ১০ মাস মেয়াদী ডিপিএড কোর্স
কোর্সটির সময়সীমা হবে ১০ মাস। এটি হবে অনাবাসিক ও বৈকালিক, যাতে কর্মজীবী শিক্ষার্থীরাও সুবিধা নিতে পারেন।
📌 যারা আবেদন করতে পারবেন
যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে—
স্নাতক,
-
স্নাতক (সম্মান),
-
অথবা সমমানের ডিগ্রি প্রাপ্ত প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
শর্তাবলি:
ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি অথবা
-
৪ স্কেলে সিজিপিএ ২.২৫,
-
৫ স্কেলে সিজিপিএ ২.৮ আবশ্যক।
-
শিক্ষা জীবনের কোনো স্তরে তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য নয়।
আগ্রহী প্রার্থীরা নির্ধারিত ফি প্রদান করে আবেদন করতে পারবেন। ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। খুব শিগগিরই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও নেপের ওয়েবসাইটে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
📌 কোর্সে যেসব বিষয় থাকবে
ডিপিএড কোর্সটি হবে অত্যাধুনিক শিক্ষণ পদ্ধতিনির্ভর। এতে থাকছে—
শিক্ষা পরিচিতি ও শিক্ষা দর্শন
-
শিশুর বিকাশ ও শিখন
-
শিক্ষণ পদ্ধতি, কৌশল ও শ্রেণি ব্যবস্থাপনা
-
শিক্ষাক্রম ও শিখন সামগ্রী
-
মূল্যায়ন ও ফলাবর্তন
-
ভাষা দক্ষতা উন্নয়ন (বাংলা ও ইংরেজি)
-
গণিত ও বিজ্ঞান দক্ষতা উন্নয়ন
-
আইসিটি-ভিত্তিক শিক্ষা
-
সামাজিক দক্ষতা, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ
-
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা, শিল্পকলা
-
হাতে-কলমে অনুশীলন, সিমুলেশন ও বিদ্যালয়ভিত্তিক অনুশীলন
নেপ কর্তৃক পাঠানো তথ্যে বলা হয়, দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে এই কোর্স। দক্ষ শিক্ষক তৈরি হবে, শিক্ষার্থীদের শেখার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থায়ী ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিপিএড কোর্স চালু হলে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে এবং আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।



No comments
Your opinion here...