দেশজুড়ে ভূমিকম্প– বিদ্যালয়গুলোকে মহড়া ও সচেতনতা বাড়ানোর নির্দেশ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের
দেশজুড়ে ভূমিকম্প– বিদ্যালয়গুলোকে মহড়া ও সচেতনতা বাড়ানোর নির্দেশ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের
সংবাদ প্রতিবেদন:
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকাসহ সারা দেশে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প এবং তার পরবর্তী আফটারশকের প্রেক্ষাপটে সর্বস্তরে সচেতনতা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। ২৩ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে জারি করা এক গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদেশে ভূমিকম্প মোকাবেলায় বিদ্যালয় পর্যায়ে মহড়া আয়োজন, সচেতনতা লিফলেট বিতরণ ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
স্মারক নং- ৩৮.০১.০০০০.১০৭.৩৭.০০৬.২৪-২৪১৭ এ উল্লেখ করা হয় যে, ২১ নভেম্বর ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শক্তিশালী ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার পর পরদিনও একাধিক আফটারশক হয়, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক প্রস্তুত করা ভূমিকম্পকালীন করণীয় বিষয়ক তথ্যপত্র সকল বিদ্যালয়ে সরবরাহ করা হয়েছে।
ডিপিই মহাপরিচালক আবু নূর মোঃ শামসুজ্জামান স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় জানানো হয়, প্রতিটি বিদ্যালয়ে জরুরি ভিত্তিতে ভূমিকম্প বিষয়ক সচেতনতা কার্যক্রম ও মহড়া পরিচালনা করতে হবে।
ভূমিকম্প মহড়া ছয় ধাপের নির্দেশনা
বিদ্যালয়গুলোতে ভূমিকম্প মহড়া পরিচালনার জন্য ছয়টি ধাপ নির্ধারণ করা হয়েছে—
-
সতর্ক সংকেত ধাপ: পাগলা ঘন্টা বা বিশেষ ঘন্টাধ্বনি দিয়ে ভূমিকম্পের সংকেত প্রদান।
-
সাড়া প্রদান ধাপ: শিক্ষার্থী–শিক্ষকেরা ডেস্ক বা শক্ত আসবাবের নিচে আশ্রয় নিয়ে মাথা সুরক্ষিত রাখবে।
-
উদ্ধার ধাপ: ঘন্টা থামার পর পূর্বনির্ধারিত রুট দিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়া।
-
এসেম্বলি ধাপ: শ্রেণীভেদে লাইন করে নির্ধারিত জায়গায় অবস্থান।
-
নাম ডাকার ধাপ: সবাই নিরাপদে এসেছে কি না তা নিশ্চিত করতে উপস্থিতি যাচাই।
-
মূল্যায়ন ধাপ: মহড়ায় ত্রুটি–বিচ্যুতি শনাক্ত করে পরবর্তী সংশোধনের ব্যবস্থা।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা ভূমিকম্প সচেতনতা নিয়ে ছড়া আবৃত্তি করবে বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়
তথ্যপত্রে বলা হয়—
আতঙ্কিত না হয়ে টেবিল, ডেস্ক, পিলার বা শক্ত আসবাবের নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
-
জানালা, আলমারি, ভারী ঝুলন্ত বস্তু, গ্যাস লাইনের কাছে অবস্থান করা যাবে না।
-
লিফট ব্যবহার না করে খোলা স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।
-
গাড়িতে থাকলে ব্রিজ বা খুঁটি থেকে দূরে গাড়ি থামিয়ে ভেতরে অবস্থান করা নিরাপদ।
-
ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়লে কম নড়াচড়া করে কাপড় দিয়ে মুখ-নাক ঢেকে সাহায্যের সংকেত দিতে হবে।
ভূমিকম্প পরবর্তী করণীয়
আফটারশকের আশঙ্কায় খোলা জায়গায় অবস্থান করতে হবে।
-
গ্যাসের গন্ধ, ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক তার বা দেয়াল থেকে দূরে থাকতে হবে।
-
জরুরি তথ্যের জন্য রেডিও ব্যবহার ও আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
-
উদ্ধার কাজে শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতিমূলক নির্দেশনা
ভবিষ্যতে ঝুঁকি কমাতে বাড়ি নির্মাণের সময় বিল্ডিং কোড মেনে চলা, ভারী আসবাব দেয়ালে আটকানো, টর্চ, রেডিও, ফার্স্ট-এইডসহ জরুরি ব্যাগ প্রস্তুত রাখা এবং জরুরি নির্গমন পথ নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ডিপিইর বার্তা:
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানায়—
“যথাযথ সচেতনতা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করলে ভূমিকম্পজনিত ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।”
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
সেকশন-২, মিরপুর, ঢাকা ১২১৬
www.dpe.gov.bd
স্মারক নং- ৩৮.০১.০০০০.১০৭.৩৭.০০৬.২৪-২৪১৭
তারিখঃ ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ২৩ নভেম্বর ২০২৫
বিষয়: ভূমিকম্প দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে অবহিতকরণ।
উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, গত ২১/১১/২০২৫ খ্রি. তারিখে ঢাকাসহ সারা দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। উক্ত ভূমিকম্পের পর After Shock হিসেবে পরবর্তী দিনেও একাধিক ভূকম্পন অনুভূত হয়। এ প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দারুণভাবে দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরসহ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
০২। এমতাবস্থায়, প্রতিটি বিদ্যালয়ে ভূমিকম্পকালে বা তৎপূর্ব বা পরবর্তীকালে করণীয় বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স দপ্তর থেকে জারিকৃত তথ্যপত্র এতদসঙ্গে প্রেরণ করা হলো। তথ্যপত্র মোতাবেক মহড়া আয়োজন ও ভূমিকম্প পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সচেতনতা লিফলেট সকল স্তরে ব্যাপক প্রচারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
বিষয়টি অতীব জরুরি।
স্বাক্ষরিত
আবু নূর মোঃ শামসুজ্জামান
মহাপরিচালক
ভূমিকম্প মহড়া নির্দেশিকা
(প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য)
মহড়া অনুষ্ঠানের আগে মহড়ার করনীয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
স্কুলে ভূমিকম্পের মহড়া সাধারণত ছয়টি ধাপে বা পর্যায়ে করা যায়, যেমন-
১। সর্তক সংকেত বা ঘন্টা পর্যায় ২। সাড়া প্রদান পর্যায়
৩। উদ্ধার পর্যায় ৪। এসেম্বলী পর্যায়
৫। নাম ডাকা বা মাথা গোনা পর্যায়, এবং ৬। মূল্যায়ন পর্যায়
১। সর্তক প্রদান পর্যায় (The alarm phase)
এই পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকগণ হঠাৎ তীব্র ঘন্টাধ্বনির (পাগলা ঘন্টা) মাধ্যমে ভূমিকম্প ঘটার সতর্ক সংকেত পাবেন। এক্ষেত্রে স্কুল ঘন্টার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে, তবে অবশ্যই সতর্ক সংকেত হিসাবে ঘন্টার ব্যবহার সবার আগে থেকেই জানা থাকতে হবে যাতে করে ঘন্টা বাজার সাথে সাথে সবাই দ্রুত সাড়া দিতে পারে।
২। সাড়া প্রদান পর্যায় (The response phase)
ঘন্টা বাজার সংগে সংগে এই পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকগণ ক্লাসরুমের টেবিল, চেয়ার, বেঞ্চ এর নীচে যত দ্রুত সম্ভব এমন ভাবে ঢুকে পড়বেন যাতে তাদের মাথা সম্পূর্ণ ভাবে নিরাপদ থাকে। মাথা নিরাপদ রাখতে ছাত্র-ছাত্রীরা মাথার উপরে তাদের স্কুলের ব্যাগ ধরে রাখবে। এছাড়াও ক্লাসরুমের কর্নার বা দুইটি কলামের সংযোগ স্থানে মাথার উপরে ব্যাগ দিয়ে অথবা মাথার পেছনে হাত দিয়ে উপুড় হয়ে বসে থাকবেন। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, কোন ভাবেই লাইট, জানালা ইত্যাদির পাশে অবস্থান নেওয়া যাবে না।
৩। উদ্ধার পর্যায় (The evacuation phase)
এই পর্যায়ে ঘন্টাধ্বনি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেকেই যার যার জায়গায় অবস্থান করবেন। ঘন্টাধ্বনি বন্ধ হওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকগণকে পূর্ব নির্ধারিত উদ্ধারের রাস্তা (Evacuation Route) দিয়ে উদ্ধার করে ক্ষতিগ্রস্থ স্কুল ভবন এর বাইরে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হবে। এখানে মনে রাখতে হবে উদ্ধারের রাস্তা পূর্বে থেকেই নির্ধারন করে রাখতে হবে। নিরাপদ জায়গা হিসেবে স্কুলের খোলা মাঠ, বাস্কেট বল মাঠ ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। এই নিরাপদ জায়গা গুলো ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এসেম্বলী পয়েন্ট বা এসেম্বলীর স্থান নামে পরিচিত থাকবে আগে থেকেই।
৪। এসেম্বলী পর্যায় (The assembly phase)
এই পর্যায়ে এসেম্বলীর স্থানে ছাত্র-ছাত্রীরা শ্রেণী এবং রোল নাম্বার অনুযায়ী লাইন দিয়ে দাঁড়াবে। লাইনে দাড়ানোর পর সবাই একসাথে ভূমিকম্পের প্রস্তুতি ও সচেতনতা মূলক ছড়া আবৃতি করবে (ছড়া সংযুক্ত)
৫ । নাম ডাকা বা মাথা গোনা পর্যায় (The head count phase- otherwise called the roll call phase)
শ্রেনী কক্ষের সবাই উদ্ধার হয়ে এসেম্বলীর স্থানে আসতে পেরেছে কিনা সেটা এ পর্যায়ে দেখতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা লাইন ধরে দাড়ানোর পর শিক্ষকগণ ছাত্র-ছাত্রীদের রোল কল বা নাম ডাকবে সকলের উদ্ধার নিশ্চিত হওয়ার জন্য। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেশী হলে মাথা গোনার মাধ্যমেও নিশ্চিত হওয়া যায়।
৬। মূল্যায়ন পর্যায় (The evaluation phase)
নাম ডাকা বা মাথা গোনা শেষ হওয়ার পর সম্পূর্ণ মহড়াটি মূল্যায়ন করে দেখতে হবে। মুল্যায়নে যে বিষয় গুলো দেখতে হল, মহড়ায় কোন ত্রুটি ছিলো কিনা, মহড়ার সময় কোন সমম্যার সৃষ্টি হয়েছিল কিনা। মহড়ায় কোন ত্রুটি বা সমস্যা থাকলে তার কারণ অনুসন্ধান করে ভবিষ্যত মহড়ায় এই সমস্যাগুলো দূর করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচী (সিডিএমপি-২)
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ
খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
যথাযথ সচেতনতা ও প্রস্তুতি ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে
ভূকম্পণের সময় করণীয়ঃ
👉ভূকম্পণ অনুভূত হলে শান্ত থাকুন: আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করবেন না কিংবা তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ি থেকে বের হবার চেষ্টা করবেন না।
👉ভূমিকম্পের সময় বিছানায় থাকলে, বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে নিন; অতঃপর টেবিল, ডেস্ক বা শক্ত কোন আসবাবের নিচে আশ্রয় নিন এবং তা এমনভাবে ধরে থাকুন যেন মাথার উপর থেকে সরে না যায়। এছাড়া শক্ত দরজার চৌকাঠের নিচে ও পিলারের পাশে আশ্রয় নিতে পারেন।
👉 বারান্দা, ব্যালকনি, জানালা, বুকশেল্ফ, আলমারি, কাঠের আসবাবপত্র, বাঁধানো ছবি বা অন্য কোন ঝুলন্ত ভারি বস্তু থেকে দূরে থাকুন।
👉রান্নাঘরে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বের হয়ে আসুন। সম্ভব হলে বাড়ির বিদ্যুতের মূল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন ও গ্যাসের চাবি বন্ধ করুন।
👉লিফ্ট ব্যবহার করবেন না।
👉উচু বাড়ির জানালা, বারান্দা বা ছাদ থেকে লাফ দেবেন না।
👉 ঘরের বাইরে থাকলে গাছ, উচু বাড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে খোলাস্থানে আশ্রয় নিন।
👉জনাকীর্ণ ঘরে (যেমন- গার্মেন্টস্ ফ্যাক্টরি, হাসপাতাল, সিনেমা হল, মার্কেট) থাকলে বাইরে বের হওয়ার জন্য দরজার সামনে ভিড় কিংবা ধাক্কাধাক্কি করবেন না। পণ্য সামগ্রীর শেল্ফ থেকে দূরে আশ্রয় নিন এবং দু-হাতে মাথা ঢেকে বসে পড়ুন।
👉 গাড়িতে থাকলে ওভারব্রীজ, ফ্লাইওভার, গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে গাড়ি থামান। ভূকম্পণ না-থামা পর্যন্ত গাড়ির ভেতরেই থাকুন।
👉ভাঙা দেয়ালের নীচে চাপা পড়লে বেশি নড়া-চড়ার চেষ্টা করবেন না। কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন যাতে ধুলোবালি শ্বাসনালিতে না ঢোকে। সম্ভব হলে দেয়ালের পাশে সরে আসুন এবং উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করুন। শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে উচ্চস্বরে চিৎকার করুন। খেয়াল রাখবেন, এ-সময় যাতে শ্বাসযন্ত্রে ধুলোবালি প্রবেশ না করে।
👉ভূমিকম্প সাধারণত ৩০-৪০ সেকেন্ড স্থায়ী হয় এবং তা আমাদের বুঝতেই ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড চলে যায়। ভূমিকম্পের সময় তাই ভবন থেকে দৌড়ে বের হওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।গাড়িতে থাকলে ওভারব্রীজ, ফ্লাইওভার, গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে গাড়ি থামান। ভূকম্পণ না-থামা পর্যন্ত গাড়ির ভেতরেই থাকুন।
👉ভাঙা দেয়ালের নীচে চাপা পড়লে বেশি নড়া-চড়ার চেষ্টা করবেন না। কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন যাতে ধুলোবালি শ্বাসনালিতে না ঢোকে। সম্ভব হলে দেয়ালের পাশে সরে আসুন এবং উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করুন। শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে উচ্চস্বরে চিৎকার করুন। খেয়াল রাখবেন, এ-সময় যাতে শ্বাসযন্ত্রে ধুলোবালি প্রবেশ না করে।
ভূমিকম্প সাধারণত ৩০-৪০ সেকেন্ড স্থায়ী হয় এবং তা আমাদের বুঝতেই ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড চলে যায়। ভূমিকম্পের সময় তাই ভবন থেকে দৌড়ে বের হওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
ভূমিকম্প পরবর্তীকালে করণীয়ঃ
👉একবার কম্পণ হওয়ার পর আবারো কম্পণ হতে পারে। তাই প্রথমবার অনুভূত কম্পণ থেমে যাওয়ার পর ঘর থেকে সিঁড়ি দিয়ে সারিবদ্ধভাবে বের হয়ে খালি জায়গায় আশ্রয় নিন।
👉বৈদ্যুতিক/টেলিফোনের খুঁটি ও তার, উচু দেয়াল ও ভবন থেকে দূরে। থাকুন।
👉গ্যাস বা অন্য কোন রাসায়নিক দ্রব্যের গন্ধ পেলে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।
👉জরুরি তথ্য পাওয়ার জন্য রেডিও ব্যবহার করুন।
👉কেউ অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
👉উদ্ধার কাজে তৎপর সংস্থাসমূহকে সহযোগিতা করুন।
👉উদ্ধারের ক্ষেত্রে শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিন।
মনে রাখবেন, একটি ভূমিকম্পের পর আরও ভূকম্পণ হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ভবন, ব্রীজ ও বিভিন্ন অবকাঠামো থেকে দূরে থাকুন। কারণ পরবর্তী ভূকম্পণে সেগুলো ধ্বসে যেতে পারে।
ভূমিকম্প মোকাবেলায় নিজেকে প্রস্তুত রাখুন
👉 বাড়ি নির্মাণের সময় বিল্ডিং কোড মেনে চলুন।
👉 গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের সংযোগ ঝুঁকিমুক্ত কি-না তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। এগুলো বাড়ি/বাসার কোথায় অবস্থিত এবং কিভাবে বন্ধ করতে হয় তা সকলকে জানিয়ে রাখুন।
👉জরুরি অবস্থায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার সম্ভাব্য একাধিক পথসহ বাড়ির পাশের ফাঁকা জায়গা পরিবারের সকলকে দেখিয়ে রাখুন।
👉 ঘরের ভারি আসবাবপত্র (যেমন- আলমারি, শেল্ফ, ফুলের টব, ছবির ফ্রেম ইত্যাদি) যাতে ভূমিকম্পে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা না ঘটাতে পারে, সেজন্য যথাসম্ভব পেছন থেকে আংটা লাগিয়ে দেয়ালের সাথে আটকিয়ে রাখুন।
👉ভারি ও ভঙ্গুর জিনিসপত্র শেলফের নিচের তাকে রাখুন।
👉ফায়ার স্টেশন, হাসপাতাল/ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহের টেলিফোন নম্বর বাড়ির প্রকাশ্য স্থানে রাখুন যেন তা সকলে দেখতে পারে।
👉বহুতল ভবন/ মার্কেট/ হোটেল/ বিদ্যালয়ের সিঁড়ি প্রশস্ত করুন ও জরুরি দরজা ও সিঁড়ির ব্যবস্থা রাখুন।
👉 ভূমিকম্পকালীন আত্মরক্ষার স্বার্থে ঘরে সবসময়ের জন্য রেডিও, টর্চ লাইট, হাতুড়ি, হেলমেট, কুড়াল ও প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামসমূহ একটি ব্যাগে মজুদ রাখুন।
ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলা প্রত্যেকেরই নিজ নিজ দায়িত্ব।
পিডিএফ ডাউনলোড









No comments
Your opinion here...