মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে গাইডলাইন বাস্তবায়নের নির্দেশ
মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে গাইডলাইন বাস্তবায়নের নির্দেশ
ঢাকা, ৩১ আগস্ট ২০২৫:
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর দেশের সকল মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। এ লক্ষ্যে "মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা (School Related Gender Based Violence-SRGBV) হতে সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত গাইডলাইন" অনুসরণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ৩৭.০২.০০০০.১০৭.৩১.৩১১.২০২২-১৪৮৪ নম্বর স্মারকে জানানো হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন "লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (লেইস)" প্রকল্প বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় অক্টোবর ২০২৩ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৮ মেয়াদে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ঋণচুক্তির অন্যতম শর্ত হিসেবে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বুলিং মোকাবেলা ও প্রতিরোধ কার্যক্রম গ্রহণ বাধ্যতামূলক।
গাইডলাইন অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে:
১. জেন্ডারভিত্তিক হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন:
প্রতিটি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে Sexual Harassment Prevention Committee (SHPC) গঠন করতে হবে। এই কমিটি গাইডলাইনের অনুচ্ছেদ ৬.২.১ থেকে ৬.২.৪ অনুসারে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
২. ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা:
যেসব শিক্ষার্থী জেন্ডারভিত্তিক হয়রানি, সহিংসতা বা বুলিংয়ের শিকার হবে, তাদের জন্য রেফারেল পদ্ধতি চালু করতে হবে। ভুক্তভোগীদের উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বা বিশেষজ্ঞের কাছে প্রেরণ করতে হবে। প্রয়োজনে টেলি-কাউন্সেলিং সেবা যেমন— মনের যত্ন (০৯৬৪৩-২৬২৬২৬) বা Neeramoy Patient App সম্পর্কেও সচেতন করতে হবে।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্থানীয় পর্যায়ের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত একটি সার্ভিস ম্যাপিং প্রস্তুত রাখতে হবে এবং তা নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে। অভিভাবকের অনুমতি সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের বিশেষজ্ঞের কাছে প্রেরণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অধিদপ্তর বলেছে, এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি এবং এটি জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG-4) বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সংযুক্তি হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে—
১. মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা হতে সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত গাইডলাইন।
২. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনপত্র।
৩. মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তা বিষয়ক গাইডলাইন।
এই নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-১) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর
বাংলাদেশ, ঢাকা
www.dshe.gov.bd
স্মারক: ৩৭.০২.০০০০.১০৭.৩১.৩১১.২০২২-১৪৮৪
তারিখ: ১৬ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ৩১ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি.
বিষয়: 'মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা (School Related Gender Based Violence-SRGBV) হতে সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত গাইডলাইন' অনুসরণে কার্যক্রম গ্রহণ। সূত্র: লেইস প্রজেক্ট এর স্মারক নং- মাউশি/লেইস/০২-১৭৮/ডিএলআর-৪.২(১)/২০২৫/২০১৩; তারিখ: ২৬ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি.
উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের আলোকে জানানো যাচ্ছে যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (লেইস) প্রজেক্ট বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় অক্টোবর ২০২৩ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৮ মেয়াদে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সাথে ঋণচুক্তির অন্যতম শর্ত হল মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে বুলিং মোকাবেলা ও প্রতিরোধ। লেইস প্রকল্প কর্তৃক 'মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা (School Related Gender Based Violence-SRGBV) হতে সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত গাইডলাইন' প্রণয়ন করা হয়েছে (সংযুক্তি: ১) যেটি ইতোমধ্যে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বারা অনুমোদিত হয়েছে (সংযুক্তি: ২)। ঋণচুক্তির শর্তানুসারে মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্ণিত গাইডলাইন অনুসৃত হবে। উল্লিখিত গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে নিম্নলিখিত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে:
ক) Sexual Harassment Prevention Committee (SHPC) বা জেন্ডারভিত্তিক হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন: গাইডলাইনের অনুচ্ছেদ ৬.২.১ থেকে অনুচ্ছেদ ৬.২.৪ অনুসরণে একটি Sexual Harassment Prevention Committee (SHPC) বা জেন্ডারভিত্তিক হয়রানি। সহিংসতা রোধ কমিটি গঠন ও কার্যপরিধি অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
খ) জেন্ডারভিত্তিক হয়রানি, সহিংসতা বা বুলিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীকে মনোসামাজিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে রেফারেল (Referral)১: গাইডলাইনটির ৬.২.৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক সাপোর্ট সিস্টেমের মাধ্যমে সাপোর্ট না পেলে তাদেরকে সুনির্দিষ্ট রেফারেল পাথওয়ের (Referral Pathway) আওতায় নিতে হবে। এক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি সার্ভিস ম্যাপিং থাকতে হবে যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যে এলাকায় অবস্থিত, সেটির আশেপাশে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কী কী ধরনের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, সেগুলো সম্বন্ধে একটি পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে এবং ব্যক্তি বিশেষজ্ঞ/প্রতিষ্ঠানের একটি হালনাগাদ তালিকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংরক্ষণ ও সরবরাহ করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অভিভাবকের অনুমতি সাপেক্ষে শিক্ষার্থীকে নিকটবর্তী কোনো মনোবিজ্ঞানী অথবা কোনো মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের নিকট প্রেরণ করবেন। প্রয়োজনবোধে শিক্ষার্থীকে টেলি-কাউন্সিলিং ভিত্তিক [যেমন: মনের যত্ন (০৯৬৪৩-২৬২৬২৬) অথবা Neeramoy Patient App ইত্যাদি] সার্ভিসগুলো সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ধারণা দিতে হবে।
২। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ও বুলিং মোকাবেলা ও প্রতিরোধে উপর্যুক্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি। বর্ণিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)-4 এ উল্লিখিত অন্তর্ভুক্তিমূলক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এমতাবস্থায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রণয়নকৃত 'মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা (School Related Gender Based Violence-SRGBV) হতে সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত গাইডলাইন' এ বর্ণিত নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
১ এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত 'মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মনো-সামাজিক সহায়তা বিষয়ক গাইডলাইন' এর অনুচ্ছেদ ১০ ও তথ্যপত্রে "রেফারেল" বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। (সংযুক্তি: ২)
সংযুক্তি: ১. মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা (SRGBV) হতে সুরক্ষা প্রদান সংক্রান্ত গাইডলাইন ২. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গাইডলাইনের অনুমোদন পত্র ৩. মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মনো-সামাজিক সহায়তা বিষয়ক গাইডলাইন (অনুমোদন পত্রসহ)
স্বাক্ষরিত
(এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী)
সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-১)
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
গাউডলাইন ডাউনলোড
No comments
Your opinion here...