পরিমার্জিত জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২৫: শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষায় নতুন দিগন্ত
👉জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ প্রাথমিক স্তর (পরিমার্জিত ২০২৫)
👉জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ (প্রাথমিক স্তর) পরিমার্জন: শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক ও অভিযোজনসক্ষম শিক্ষা নিশ্চিতে 'পরিমার্জিত ২০২৫' চালু
পরিবর্তনশীল বিশ্ব এবং প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক সমাজে শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে 'জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ (প্রাথমিক স্তর)'-কে সময়োপযোগী ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে পরিমার্জন করে 'জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ প্রাথমিক স্তর (পরিমার্জিত ২০২৫)' নামে নতুন রূপে কার্যকর করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (NCCC)-এর সভায় এটি অনুমোদিত হয়।
বর্তমান যুগ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে আগামীর অজানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অভিযোজনসক্ষম শিক্ষাক্রম এবং শিক্ষাদান পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ২০১৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমীক্ষা পরিচালনা করে এবং প্রাপ্ত তথ্য ও মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষাক্রমের কাঠামোতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০, সংবিধান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), বিশ্ব নাগরিকতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার ধারণার ওপর ভিত্তি করে প্রণয়ন করা হয় জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১। এই রূপরেখার আলোকে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য মূলযোগ্যতা, শিখনক্ষেত্র, বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা ও শিখনফল নির্ধারণ করা হয়।
শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখনের ওপর বিশেষ জোর
পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীর সক্রিয় অংশগ্রহণ, কৌতূহল ও অনুসন্ধিৎসু মনোভাব গঠনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করার ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানে যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী চিন্তার বিকাশের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি পাঠ্যবিষয়বস্তু নির্বাচন, শিক্ষা উপকরণ, ধারাবাহিক ও সামষ্টিক মূল্যায়ন কৌশল পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
মূল্যায়নে নতুন মাত্রা
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে সম্পূর্ণরূপে ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালু করা হয়েছে, আর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ধারাবাহিক মূল্যায়নের পাশাপাশি সামষ্টিক মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সামগ্রিক শিখন-অভিজ্ঞতা আনন্দময় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে।
শিক্ষকদের ভূমিকা ও প্রত্যাশা
শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষক তাঁর নিজস্ব শিক্ষাদান কৌশলের সঙ্গে শিক্ষক সহায়িকায় বর্ণিত নির্দেশনার সমন্বয় ঘটিয়ে পাঠ উপস্থাপন করবেন বলে প্রত্যাশা করা হয়। ফলে শিক্ষকের স্বাধীনতা ও সৃজনশীলতা শিক্ষাদানের মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
শিক্ষাক্রম পরিমার্জনে অংশগ্রহণকারী সকলকে কৃতজ্ঞতা
এ শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জনে যুক্ত থাকা শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে যেকোনো যৌক্তিক পরামর্শ শিক্ষাক্রমের পরবর্তী সংস্করণে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আনন্দময়, প্রাসঙ্গিক ও অভিযোজনসক্ষম শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে 'জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ (প্রাথমিক স্তর) পরিমার্জিত ২০২৫' একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
No comments
Your opinion here...