২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের বিনামুল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ নির্দেশিকা।
২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের বিনামুল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ নির্দেশিকা।(৩০/১২/২০২৪)
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
বিদ্যালয়-১ অধিশাখা
www.mopme.gov.bd
নং: ৩৮.০০.০০০০.০০৭.০৭.২৮.২২-৩০৮
তারিখ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩০
বিষয়: ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ নির্দেশিকা অনুমোদন সংক্রান্ত।
সূত্র: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্মারক নং- ৩৮.০১.০০০০.৩০০.২২.০০২.২৩.২৬৬; তারিখ: ২২/১২/২০২৪খ্রিঃ।
উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি, প্রাথমিক স্তর এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তক বিতরণের নির্দেশিকা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন করা হয়েছে। ০২। উক্ত বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে প্রেরণ করা হলো।
সংযুক্তি: অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক বিতরণ নির্দেশিকা।
স্বাক্ষরিত
মোঃ সিরাজুল ইসলাম উপসচিব
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
বই বিতরণ শাখা
২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ নির্দেশিকা
নির্দেশনা
১) প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে প্রচলিত বিদ্যমান শিক্ষাক্রম অনুযায়ী চার রঙে ছাপানো নতুন পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৫ (পাঁচ)টি ভাষার (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, পারো ও সাদরি। শিক্ষার্থীদেরকে তাদের মাতৃভাষায় রচিত পাঠ্যপুস্তক (প্রাক-প্রাথমিক, ১ম শ্রেণি, ২য় শ্রেণি ও ৩য় শ্রেণির বাংলা। প্রদান করতে হবে।
২) ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের ৫+ বয়সী প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ০১টি করে 'আমার বই' এবং ০১টি করে 'অনুশীলন খাতা। সরবরাহ করতে হবে।
৩) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত কারিকুলাম/শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে এমন নিম্নোক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামুল্যের পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করতে হবে।
ক) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়;
খ) সরকারি মাধ্যমিক/নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংঙ্গে সংযুক্ত প্রাথমিক শাখা;
গ) স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি মাধ্যমিক। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংঙ্গে সংযুক্ত প্রাথমিক শাখা;
ঘ) কিন্ডার গার্টেন;
ঙ) পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়;
চ) শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়;
ছ) শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ম;
জ) সরকারি ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এতিমখানা ও শিশু পরিবারে চালুকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়,
ঝ) বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন কর্তৃক পরিচালিত কিংবা এনসিটিবি অনুমোদিত কারিকুলাম/শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে এমন প্রাথমিক বিদ্যালয়;
ঞ) চা-বাগানের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়;
ট) বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা/এনজিও কর্তৃক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে পরিচালিত পূর্ণাঙ্গ (একই সাথে ১ম-৫ম শ্রেণি চালুকৃত) প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ঠ) সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত আবাসন ও আশ্রয়ন প্রকল্পের কমিউনিটি বিদ্যালয়, পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়;
ড) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান (যেমন সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ) কর্তৃক )
ঢ) সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত বিশেষ স্কুল (বিশেষতঃ প্রতিবন্ধীদের জন্য);
ণ) পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অধীনস্থ 'চরজীবিকায়ন কর্মসূচি'র আওতায় পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়; পরিচালিত শিখন কেন্দ্রসমূহ।
ত) পিইডিপিও এর সাব কম্পোনেন্ট ২.৫। 'আউট অব স্কুল চিলড্রেন' কার্যক্রম এর আওতায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে
থ) 'বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নিবন্ধন বিধিমালা, ২০২৩' এর আওতায় নিবন্ধিত ও নিবন্ধনের জন্য আবেদনকারী বিদ্যালয়সমূহ
৪) উপরে বর্ণিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ ছাড়াও যে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূলোর পাঠ্যপুস্তক প্রাপ্তির আবেদন করলে উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিস যথাযথ যাচাইঅন্তে ঐ সকল শিক্ষার্থীর নিকট পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের ব্যবস্থা করবে।
৫) বিদেশে অবস্থিত যেসকল বিদ্যালয় এনসিটিবি প্রণীত কারিকুলাম/শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে না এবং শুধুমাত্র একটি বা দুটি বইয়ের জন্য চাহিদা প্রেরণ করে, তাঁদেরকে অনলাইন সংস্করণ ডাউনলোড করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কপি করে ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দেয়া হলো। কোন কারণে অনলাইনে পাঠাপুস্তক পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে তাদেরকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চাহিদামত পাঠ্যপুস্তক বরাদ্দ প্রদান করবে। তবে, পরিবহন খরচ সংশ্লিষ্ট দেশের বিদ্যালয়/ দুতাবাস অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বহন করতে হবে এবং নিজ খরচে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় গুদাম থেকে পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহ করতে হবে।
৬) দেশের অভ্যন্তরে ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালিত যে সকল বিদ্যালয় এনসিটিবি প্রণীত ১(এক) টি বা ২(দুই)টি বিষয়ের পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা প্রেরণ করে, ঐসকল প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন সংস্করণ ডাউনলোড করে ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দেয়া হলো। কোন কারণে অনলাইনে পাঠ্যপুস্তক পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ঐসকল প্রতিষ্ঠানকে বিভাগীয় বাফার থেকে চাহিদামত পাঠ্যপুস্তক সরবরা করা হবে। তবে, পরিবহন খরচ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বহণ করতে হবে।
৭) সকল পাঠ্যপুস্তকের ইলেকট্রনিক কপি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ওয়েবসাইটে (www.nctb.gov.bd) পাওয়া যাবে এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের (www.dpe.gov.bd) সাথে উক্ত ওয়েবসাইটের লিংক থাকবে।
৮) এনসিটিবি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের সকল পাঠ্যপুস্তক উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছানো নিশ্চিত করবে। এরূপ পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের ক্ষেত্রে। নির্ধারিত চালান ফরম ব্যবহার করতে হবে।
৯) প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের সকল পাঠ্যপুস্তক বিদ্যমান চালানে সরবরাহ/বিতরণ করতে হবে এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৫ (পাঁচ) টি ভাষায় মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের বিতরণের জন্য পৃথক চালান ব্যবহার করতে হবে।
১০) পাঠ্যপুস্তক বিতরণের পূর্বে প্রত্যেকটি পাঠ্যপুস্তকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয়ের সীল দিতে হবে। উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসের সীল পাঠ্যপুস্তকের কভারে এবং বিদ্যালয়ের সীল পাঠ্যপুস্তকের ২য়/৩য় পৃষ্ঠায় ব্যবহার করতে হবে। সীলে 'বিনামূল্যে বিতরণকৃত' কথাগুলো উল্লেখ থাকবে।
১১) পাঠ্যপুস্তক গ্রহণকারী ১ম ও ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীর পিতা/মাতা/অভিভাবকের কাছ থেকে বিদ্যালয় কর্তৃক প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে স্বাক্ষর। গ্রহণ করতে হবে। ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা 'বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ' রেজিস্টারে স্বাক্ষর করে পাঠ্যপুস্তক গ্রহণ করবে।
১২) বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্তৃক লেটারহেড প্যাডে প্রত্যয়নের মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিকট পাঠ্যপুস্তক হস্তান্তর করতে হবে। অন্য কারও প্রত্যয়ন গ্রহণযোগ্য হবেনা এবং ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছাড়া অন্য কারও নিকট পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা যাবে না।
১৩) বিভাগীয় বাফার স্টক/জেলা/উপজেলা/থানার উদ্বৃত্ত পাঠ্যপুস্তক থেকে নিম্নোক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি এবং প্রাথমিক স্তরের বাংলা/ইংরেজি ভার্সনের পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করতে হবেঃ
১৪) 'বৌদ্ধ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা' এবং 'খ্রিস্টান ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা' বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক জেলা পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে এবং উপজেলাগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকে উক্ত পাঠ্যপুস্তক গ্রহণ করবে।
১৫) ইংরেজি ভার্সনের পাঠ্যপুস্তক জেলায় সরবরাহ করা হবে এবং উপজেলাগুলো ধরাদ্দ অনুযায়ী সেখানে থেকে উক্ত পাঠ্যপুস্তক গ্রহণ করবে।
১৬) ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে সম্পূর্ণ নতুন পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হবে বিধায় কোন অবস্থাতেই ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তর (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উদ্বৃত্ত পঠন-পাঠন সামগ্রী/পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ/বিতরণ করা যাবে না।
১৭) পাঠ্যপুস্তক গ্রহণ, বিতরণ এবং উদ্বৃত্ত পাঠ্যপুস্তকের হিসাব রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
১৮) ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ এর মধ্যে নির্ধারিত অনলাইন সফটওয়ারে (PEMIS) পাঠ্যপুস্তক বিতরণ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য এন্ট্রি সম্পন্ন করতে হবে।
১৯) ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখের মধ্যে উল্লিখিত সফটওয়্যারে ভর্তিকৃত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা সঠিকভাবে এন্ট্রি করতে হবে এবং কেবলমাত্র ঐ তথ্যের ভিত্তিতেই পরবর্তী বছরের পাঠ্যপুস্তকের সম্ভাব্য চাহিদা নিরূপণ করা হবে। উল্লেখ্য, সফটওয়্যারে এন্ট্রিকৃত ছাত্র-ছাত্রীর উল্লিখিত সংখ্যা সর্বক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে।
২০) এনসিটিবি মূল্যের বিনিময়ে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর) কোন পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিতরণ করবে না।
২১) জরুরি প্রয়োজন মিটানোর জন্য প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি এবং প্রাথমিক স্তরের (বাংলা ভার্সনের) পাঠ্যপুস্তক সকল বিভাগীয় বাফার স্টকে মোট চাহিদার ১% সংরক্ষণ করতে হবে। উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাঠ্যপুস্তক ৫% হারে বিভাগীয় বাফার স্টকে সংরক্ষণ করতে হবে।
২২) রিপিটার ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা যাবে।
২৩) প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের পঠন-পাঠন সামগ্রী/পাঠ্যপুস্তক বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে বিভাগীয়/আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২৪) এ নির্দেশিকার বিষয়ে যেকোন ব্যাখ্যা প্রদান বা স্পষ্টিকরণ কেবলমাত্র প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন থাকবে।
No comments
Your opinion here...