রমজান মাসের বিদ্যালয়ে পাঠদান ও সামাজিক মাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে উদবুদ্ধকরণ সভার কার্যবিবরণী (০৩/০৪/২৩)।
রমজান মাসের বিদ্যালয়ে পাঠদান ও সামাজিক মাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে উদবুদ্ধকরণ সভার কার্যবিবরণী (০৩/০৪/২৩)।
রমজান মাসের বিদ্যালয়ে পাঠদান ও সামাজিক মাধ্যমে বিরূপ মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করন সভার কার্যবিবরণী।
সভাপতি:
সৈয়দ মামুনুল আলম
অতিরিক্ত মহাপরিচালক
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
সভার তারিখ ও সময়:
৩৯ মার্চ ২০২৩, সকাল ১০ ঘটিকা
অতিরিক্ত মহাপরিচালকের সম্মেলন কক্ষ
ষষ্ঠ তলা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
মাঠ পর্যায়ের বিভাগীয় উপপরিচালক ও জেলা পর্যায়ের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারগণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা ও ভার্চুয়ালি (জুম) সংযুক্ত সকলকে স্বাগত জানিয়ে সভাপতি সভার কার্যক্রম শুরু করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রমজানের ১৫ দিন বা ০৯ কর্মদিবস অর্থাৎ ৬ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমূহ অতিমারি করোনার কারণে বিদ্যালয় স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় লার্নিং লস রিকভারি করার জন্য খোলা রাখা হয়েছে। এই খোলা রাখার ফলে এর সাথে সংশ্লিষ্ট সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এর মাঝে কিছুটা বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। এই বিরূপ মনোভাবে প্রকাশ ঘটছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের মতামত বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে। তাদের এ মতামত বহিঃপ্রকাশ সরকারি কর্মচারী আচরণবিধির পরিপন্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহারে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে এ বিষয়ে সময় সময় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা/ পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
তারপরও দেখা যাচ্ছে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় যারা কর্মরত আছেন তারা বুঝে হোক আর না বুঝে হোক, জ্ঞানতো হোক বা উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে হোক বা উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে হোক তারা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাদের মন্তব্য প্রদান করে যাচ্ছে। বিষয়টি সরকারের বিভিন্ন মহলে তীব্র অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলকে জানানো ও মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়ে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার জন্য আজকের এই সভা আয়োজন করা হয়েছে মর্মে সভাপতি মহোদয় জানান। ডিডি ও ডিপিইও ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে এই সভা করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, আপনারা হচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষার মূল চালিকা শক্তি। আপনাদের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা মাঠ পর্যায়ে সুচারুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আজকের সভার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিভাগীয় উপপরিচালকগণ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের মাধ্যমে সকল সুপারেনটেনডেন্ট, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ইন্সট্রাক্টর, সহকারী ইন্সট্রাক্টর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের অসন্তোষ বিষয়টি যাতে পৌঁছানো হয় তার নিশ্চিত করা এবং সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট শহরকে অধিকতর সচেতন করা। প্রাথমিক শিক্ষার মাঠ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত আছেন তারা অত্যন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্লাসটার পর্যায়ের সকল শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করতে হবে এবং ৬ এপ্রিল পর্যন্ত শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিগত ২/৩ দুই তিন মাসে প্রাথমিক শিক্ষার ভাবমূর্তি, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মান ইজ্জত, সম্মান বৃদ্ধি পায় এমন সব কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে যে সকল কাজের প্রতিফলন ঘটে সে সকল কর্মকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকতে হয়েছে। সকলের সামগ্রিক চেষ্টার ফলেই আজকে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা আন্তর্জাতিক সুনাম ও মান অর্জনের দিকে ধাবিত। এরকম অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয় অল্প কিছু সংখ্যক লোকের খামখেয়ালিপনা, কিছু বুদ্ধিহীনতা, কিছু অবিবেচক কাজের জন্য প্রাথমিক শিক্ষার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। আমাদের কাজের গতিশীলতা বাধাগ্রস্ত হয়। আমরা সবাই জানি বর্তমান দেশের আর্থসামাজিক অবস্থাটা কি? বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে কোথায় ছিল, ধাপে ধাপে বর্তমান অবস্থা কোথায়। বিশেষ করে ২০১০ থেকে বাংলাদেশের এজেন্ডা ভিত্তিক অগ্রগতি লক্ষণীয়। যখন কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায়ে কথা বলবেন তখন সরকারের উন্নয়নের চিত্র সামগ্রিক অবস্থা তুলে ধরতে হবে। করোনা অতিমারী এবং বিশ্বের সামগ্রিক অবস্থার প্রেক্ষিতে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যেভাবে আমাদের অগ্রগতির কথা তা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে সকলের মেজাজ মর্জি ঠিক রাখা কঠিন। সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পূর্ণ সমর্থ্য অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। সরকারে আয় বৃদ্ধি না হলে ব্যয় বাড়ানো সম্ভব না বিধায় সরকার ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করেছেন। পত্র পত্রিকার মাধ্যমে ও সরকারের নীতি আদেশ গুলি জানা যাবে এবং তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্ব স্ব উদ্দেশ্যে নিজের মেধা মাননুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যত অসুবিধা থাকুক না কেন আমাদের কার্যক্রমে সরকার তথা মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর কোন বিব্রতকর অবস্থায় না পড়ে সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। অতঃপর সভাপতি মহোদয় নিম্ন বর্ণিত দিকনির্দেশনা সমূহ প্রদান করেন। ★ মাঠ পর্যায়ে যে সকল শিক্ষক /কর্মকতা ফেসবুক পেজে সরকার বা রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভাবমূর্ত ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোন পোস্ট ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করে বা জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনরকম তথ্য উপাত্ত যা জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো বিষয় লেখা অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি আপলোড করে এবং ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার এবং অন্য কোন রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত কোন পোস্ট ছবি অডিও বা ভিডিও আপলোড কমেন্ট লাইক শেয়ার করে থাকে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। ★ ডিপিইও গণ সারপ্রাইজ ভিজিটে উপজেলা যাবেন এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের সাথে ভার্চুয়াল সভা করবেন। ★ উপজেলা শিক্ষা অফিসার /সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার গণ প্লাস্টার পর্যায়ে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করবেন। ★ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ বিদ্যালয়ের সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন। ★ জরুরি প্রয়োজন না হলে অনুমোদন ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ না করা। যার যার কর্মস্থল কে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচনা করে, যার যার উপর অর্পিত দায়িত্ব সার্বিকভাবে পালন করতে হবে। ★সবাইকে একত্রিত হয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের অনেক সমস্যা আছে। চাকুরী গত কারণে, সুযোগ-সুবিধা জনিত কারণে বা ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে আমাদের অনেক অসুবিধা আছে। দাসত্ব সকল কিছু বিবেচনায় নিয়ে আন্তরিকতা সহমর্মিতা নিষ্ঠার সাথে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য কাজ করতে হবে। সভায় আর কোন আলোচনা না থাকায় সভাপতি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। স্বাক্ষরিত সৈয়দ মামুনুল আলম অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব)
No comments
Your opinion here...