ad

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে ‘শতভাগ পদোন্নতি’ পুনর্বিবেচনার নির্দেশ

Views


সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে ‘শতভাগ পদোন্নতি’ পুনর্বিবেচনার নির্দেশ

সংবাদ প্রতিবেদন:

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখা থেকে ১৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে জারি করা স্মারক নং ৩৮.০০.০০০০.০০৮.১২.০০৭.১৬-৪৮৮ এর মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে, সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ গত ৮ নভেম্বর অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ অবস্থায় ৯ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে আরেকটি বৈঠক হয়, যেখানে দুই মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে শিক্ষক সংগঠনগুলো সহকারী শিক্ষকদের তিনটি দাবি তুলে ধরে—
১) সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ;
২) চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন;
৩) সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘ চাকরিকালে জীবনে মাত্র একবার পদোন্নতির সুযোগ পান। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কাজে লাগানোর জন্য প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংগঠনগুলো জানিয়ে আসছে। এমন প্রেক্ষাপটে ২০১৯ সালের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের সময় মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষক নিয়োগে শতভাগ পদোন্নতির প্রস্তাব দেয়।

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপকমিটি বিষয়টি অনুমোদন না করে পূর্বের ৬৫:৩৫ অনুপাত পরিবর্তন করে তা ৮০:২০ করার সুপারিশ করে। সেই সুপারিশ অনুযায়ী ২০২৫ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা জারি করা হয়।

বর্তমান বাস্তবতায় সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবি যুক্তিসঙ্গত হওয়ায় বিষয়টি পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এমতাবস্থায়, বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

চিঠিটি স্বাক্ষর করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব রেবেকা সুলতানা। অবগতির জন্য চিঠির কপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর প্রেরণ করা হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিদ্যালয়-২ শাখা

www.mopme.gov.bd

তারিখঃ ০৪ অগ্রহায়ন ১৪৩২ ১৯ নভেম্বর ২০২৫

স্মারক নং: ৩৮.০০.০০০০.০০৮.১২.০০৭.১৬-৪৮৮

বিষয়: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের সহকারী শিক্ষক পদ হতে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান সংক্রান্ত। 

উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডসহ ০৩(তিন) দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে "প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ" কর্তৃক গত ০৮/১১/২০২৫ তারিখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। সে প্রেক্ষিতে গত ০৯/১১/২০২৫ তারিখ সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের (প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ) সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পুনরায় গত ১০/১১/২০২৫ তারিখ সচিব, অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় এর সভাপতিত্বে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব মহোদয়সহ দুটি মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ০২টি সভায় নিম্নোক্ত ০৩ (তিন) টি দাবি উপস্থাপন করা হয় এবং শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে সহকারি শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডসহ ০৩ (তিন) দফা দাবির মধ্যে সহকারী শিক্ষকগণের ২ নং ও ৩ নং দাবির বিষয়ে দ্রুত নিরসনের জন্য আলোচনা হয় এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হতে বর্ণিত বিষয়ে প্রস্তাব প্রেরণের জন্য নির্দেশনা/পরামর্শ দেয়া হয়:

১। সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা;

২। চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা দ্রুত নিরসন; এবং

৩। সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি প্রদান।

২। উল্লেখ্য যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ সুদীর্ঘ সময় চাকুরি করে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পান। মূলত তাদের সুদীর্ঘ চাকুরী জীবনে একবারেই পদোন্নতি হয়। সুদীর্ঘ কাল চাকুরী করার ফলে প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষকগণ তাদের দীর্ঘ কর্ম অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কাজে লাগাতে পারেন। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবি জানিয়ে আসছেন। ফলশ্রুতিতে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ সংশাধনকালে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে এ মন্ত্রণালয় হতে শতভাগ পদোন্নতির প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগবিধি পরীক্ষণ সংক্রান্ত উপকমিটির সভায় বিষয়টি অনুমোদন না করে পূর্বের অনুপাত ৬৫:৩৫ হতে ৮০:২০ এ পুন: নির্ধারণ এর সুপারিশ করা হয়। এ আলোকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫ জারি করা হয়েছে। বিদ্যমান অবস্থায় সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির বিষয়টি পুন: বিবেচনা প্রয়োজন মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে।

৩। এমতাবস্থায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হতে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির বিষয়টি পুন: বিবেচনার নিমিত্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

স্বাক্ষরিত

রেবেকা সুলতানা 

যুগ্মসচিব

অবগতির জন্য  প্রেরণঃ

সিনিয়র সচিব

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।



No comments

Your opinion here...

Theme images by fpm. Powered by Blogger.