ad

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি পর্বঃ 01 (Primary teacher recruitment exam preparation episode: 01)

Views সবাইকে ছালাম জানিয়ে শুরু করছি আজকের পোস্ট। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আপনাদের জন্য  নিয়ে  আসলাম প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় র্নিদেশনা সম্বলিত পোস্ট।

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ আবেদন
সংক্রান্ত কিছু তথ্য-

১। মেয়েদের আবেদনের যোগ্যতা-
এইচএসসি/ আলিম/ সমমান পাশ।
২। ছেলেদের আবেদনের যোগ্যতা
সর্বনিম্ন স্নাতক পাশ (ডিগ্রী/ অনার্স/ ফাজিল/ সমমান পাশ)
৩। এসএসসি/ এইচএসসি/ স্নাতক বা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণি/ বিভাগ বা জিপিএ ২.০০ থাকতে হবে।
৪। আবেদনের শেষ তারিখ: ৩০ আগষ্ট ২০১৮, রাত ১১:৫৯ পর্যন্ত।
৫। আবেদন করতে হবে অনলাইনে, আবেদন ফি ১৬৬.৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে টেলিটকের মাধ্যমে।
৬। নিজে আবেদন করতে না পারলে কোন প্রফেশনাল/দোকানে গিয়ে আবেদন করুন।
৭। আবেদন করার ৭২ ঘন্টার মধ্যে আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে। এমনকি যারা আবেদনের শেষ তারিখ ৩০ আগষ্টে আবেদন করবেন তারাও তার ৭২ ঘন্টার মধ্যে আবেদন ফি পরিশোধ করতে পারবেন।
৮। আবেদন করার পর কোন ভুল ধরা পড়লে আবার নতুন করে আবেদন করুন এবং আবেদন ফি পরিশোধ করুন।
৯। আবেদন করার পর আবেদন ফি পরিশোধ করার পর ভুল ধরা পড়লেও আবার নতুন করে আবেদন করুন। সেক্ষেত্রে আপনার জন্য দুটি আবেদনেরই প্রবেশপত্র ইস্যু হবে, কিন্তু আপনি সঠিক আবেদনের প্রবেশপত্র দিয়ে পরীক্ষা দিবেন।
১০। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বাধ্যতামূলক নয়। আপনার যদি আইডি কার্ড থাকে তাহলে তা দিন। না থাকলে "নো"
অপশন সিলেক্ট করুন।
১১। আপনার স্থায়ী ঠিকানা যেটা
দিবেন সেখানেই পরীক্ষা হবে এবং আপনার নিয়োগও সেখানেই হবে।
১২। শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার
প্রবেশপত্র ডাকযোগে পাঠানো হবে। বাকি সকল কার্যক্রম অনলাইনে হবে।
১৩। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আপনার স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। সুতরাং স্থায়ী ঠিকানা সঠিক ও নির্ভুল দিন।
১৪। প্রাইমারিতে আবেদন করতে হলে ৩০ আগষ্ট ২০১৮ তারিখে কমপক্ষে আপনার বয়স ১৮ হতে হবে এবং সর্বোচ্চ ৩০ বছর (কোটার জন্য ৩২)
১৯। আবেদন করার পর মেসেজ হারিয়ে ফেললে ওয়েব সাইট থেকে আপনার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড রিকভারি করে লিখে রাখুন।
২০। এপ্লিকেন্ট কপিটি সংরক্ষণ করুন। মৌখিক পরীক্ষার সময় এটি প্রয়োজন হবে। এটি পরবর্তীতে আবারও ডাউনলোড করা যাবে।
২১। পরীক্ষার তারিখ হলে এবং
প্রবেশপত্র ডাউনলোডের জন্য
আপনাকে আপনার দেয়া মোবাইল নম্বরে এসএমএস করে জানানো হবে।
২২। সকল জেলায় একসাথে পরীক্ষা হবে না। কয়েকটি জেলা করে কয়েকটি ধাপে পরীক্ষা হবে।
২৩। আপনার পরীক্ষা আপনার স্থায়ী ঠিকানা অনুসারে (আপনার নিজ জেলায়) হবে।
২৪। বিবাহিত মহিলারা তার স্বামী
অথবা বাবার স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করতে পারবেন। নিয়োগ স্থায়ী ঠিকানায় হবে।
২৫। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য বাজারে অসংখ্য বই আছে, তাদের মধ্যে যেটা ভালো মনে করেন সেটা পড়তে পারেন । বিগত সময়ের সকল প্রশ্নের সমাধান করলে আপনার প্রস্তুতি ৮০% সম্পন্ন হয়ে যাবে। এছাড়া ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির গণিত ও সাধারণ জ্ঞানের উপর ভালো দখল রাখুন।

বর্তমানে দেশের শিক্ষিত বেকারদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একটি চাকরি। কারন একটি চাকরির সাথে জড়িয়ে আছে আপনার জীবনের অনেককিছু। চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে যারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করতে চান তারা কিভাবে প্রস্তুতি নিবেন আজ তা নিয়ে লিখছি।
এই পরীক্ষার মোট নম্বর ১০০, এর মধ্যে লিখিত পরীক্ষার নম্বর ৮০ আর মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আপনাকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। লিখিত পরীক্ষা নেয়া হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। বিষয় গুলো হচ্ছে বাংলা, গণিত, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান। প্রতিটি বিষয় থেকে ২০টি করে মোট ৮০ টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। অর্থাৎ চারটি উত্তর ভুল হলেই প্রাপ্ত নম্বর থেকে ১ নম্বর কাটা যাবে।
আপনাকে প্রতিটি বিষয়ের জন্যই আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনি যদি ৮০ এর মধ্যে ৭০+ নম্বর পান তাহলে আপনি সেইফ থাকবেন। তাই প্রস্তুতি নিতে হবে ভালভাবে। কোন অবহেলা করা যাবেনা। কারন আপনাকে কয়েক লক্ষ প্রার্থীর সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে আর একটি চাকরির সাথে আপনার জীবন ও ভবিষ্যৎ জড়িত।
কি কি পড়বেন ও কিভাবে পড়বেন-
বাংলাঃ
প্রথমেই আসি বাংলা নিয়ে। বাংলা অংশে ব্যাকরণের ওপর বেশি জোর দিতে হবে। অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড প্রণীত ব্যাকরণ বইয়ের সব অধ্যায় উদাহরণসহ ভালোভাবে পড়তে হবে। জানতে হবে কবি-সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্ম ও জীবনী সম্পর্কে। এসএসসি বোর্ড বইয়ের লেখক পরিচিতি বা সাহিত্যিক পরিচিতি অংশ পড়লে অনেকটা সহায়ক হবে। পিএসসি নির্ধারিত ১১ জন সাহিত্যিক সম্পর্কে পড়বেন। ব্যাকরণ থেকে ভাষা, বর্ণ, শব্দ, সন্ধি বিচ্ছেদ, কারক, বিভক্তি, উপসর্গ, অনুসর্গ, ধাতু, সমাস, বানান শুদ্ধি, পারিভাষিক শব্দ, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ থেকে প্রশ্ন আসে। সাহিত্য অংশে গল্প বা উপন্যাসের রচয়িতা, কবিতার লাইন উল্লেখ করে কবির নাম থেকে প্রশ্ন আসতে পারে।
এই সব গুলো বিষয় বিসিএস প্রিলিমিনারি ডাইজেস্ট বই থেকে বা অন্য যে কোন গাইডে গুছিয়ে দেওয়া আছে। সেখান থেকে পড়তে পারেন।
ইংরেজিঃ
ইংরেজি গ্রামারের Right forms of verb, Tense, Preposition, Parts of Speech, Voice, Narration, Spelling, Sentence Correction- থেকে প্রশ্ন আসে। Advance Learners by Chowdhury and Hossain বা অন্য যে কোন গ্রামার বই থেকে গ্রামারের এই টপিকস গুলো উদাহরণসহ পড়ুন। মুখস্থ করতে হবে Phrase and Idoims, Synonym, Antonym।
ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদও পড়তে হবে। এজন্য ২০১৫-১৮ সালের বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করতে পারেন। বিসিএস প্রিলিমিনারি ডাইজেস্ট বইয়ের ইংরেজি অংশটুকু ভালভাবে পড়তে পারেন।
গণিত :
এই অংশে মার্কস পাওয়া তুলনামূলক ভাবে সহজ। প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টা গণিত প্রাকটিস করা দরকার। পাটিগণিতের পরিমাপ ও একক, ঐকিক নিয়ম, অনুপাত, শতকরা, সুদকষা, লাভক্ষতি, ভগ্নাংশ থেকে প্রশ্ন আসে। বীজগণিতের সাধারণ সূত্রাবলী থেকে প্রশ্ন থাকে। মুখে মুখে ও সূত্র প্রয়োগ করে সংক্ষেপে ফল বের করার প্র্যাকটিস করতে হবে। যাতে প্রশ্ন দেখামাত্রই সূত্র প্রয়োগ করে ফল বের করা যায়। জ্যামিতির জন্য ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বর্গক্ষেত্র, রম্বস, বৃত্ত ইত্যাদির সাধারণ সূত্র ও সূত্রের প্রয়োগ প্রাকটিস করবেন। মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠ্যবই যেমন অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির গণিত বই অনুসরণ করলে ভালো হবে।
ডাইজেস্ট থেকে গণিত অংশটুকু ভালভাবে বুঝে শেষ করবেন।
সাধারণ জ্ঞানঃ
বাংলাদেশ বিষয়াবলী থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষা, ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ, ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু, সভ্যতা ও সংস্কৃতি, বিখ্যাত স্থান, বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা, অর্থনীতি, বিভিন্ন সম্পদ, জাতীয় দিবস থেকে প্রশ্ন আসতে পারে।
আর আন্তর্জাতিক অংশে বিভিন্ন সংস্থা, দেশ, মুদ্রা, রাজধানী, দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, খেলাধুলা থেকে প্রশ্ন থাকে।
আর সাম্প্রতিক বিষয়ের জন্য মাসিক কারেন্ট এফিয়ার্স পড়তে পারেন।
সাধারণ বিজ্ঞান থেকে বিভিন্ন রোগব্যাধি, খাদ্যগুণ, পুষ্টি, ভিটামিন থেকে প্রশ্ন আসতে পারে।
কম্পিউটার ও আইসিটি থেকেও প্রশ্ন থাকে। আপনি কম্পিউটার ও আইসিটির বেসিক বিষয় গুলো ভালভাবে আয়ত্ব করবেন।
বিজ্ঞান, আইসিটি ও কম্পিউটার এর জন্য ২০১৫-১৮ সালের বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন গুলো ভালভাবে পড়লে বেশ কিছু কমন পেতে পারেন।
উপরের পরামর্শ গুলো শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্যই নয়। যে কোন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ২য় শ্রেণি চাকরির জন্যও প্রযোজ্য। এইভাবে পড়লে আশা করি আপনি প্রিলিতে ভাল নম্বর পাবেন। তবে আপনি চাইলে যিনি আরো ভাল জানেন বা নিজের পরামর্শ অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারেন। তবে যেভাবেই নেন না কেন আপনাকে পড়তে হবে পরিশ্রম করতে হবে। ৩০ বছর যে চাকরি করে আপনার জীবন চলবে সেই চাকরির জন্য অন্তত ৩০ দিন দৈনিক ১৬ ঘণ্টা করে পড়ালেখা করুন। শুধুমাত্র সরকারি জবের পেছনে না ছুটে বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি জবের জন্যও চেষ্টা করুন।
পড়ুন, পরিশ্রম করুন, প্রার্থনা করুন এবং পড়ুন। আপনি যদি ভালভাবে পড়েন সেটা ওই জবে কাজে না লাগলেও অন্য কোননা কোন জবে ঠিকই কাজে লাগবে। পড়ালেখা কখনো বৃথা যায়না। কোননা কোন ভাবে এর সুফল আপনি পাবেনই। ভাল থাকবেন। আল্লাহ সবার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা 
আপনার প্রস্তুতির জন্য কিছু প্রয়োজনীয় পুস্তক।



Theme images by fpm. Powered by Blogger.